গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজ
নীতিবাক্য | জ্ঞানই আলো |
---|---|
ধরন | সরকারি |
স্থাপিত | ১৯৬৯ |
অধ্যক্ষ | প্রফেসর রনজিৎ কুমার দত্ত |
অবস্থান | চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক, চন্দনাইশ উপজেলা |
শিক্ষাঙ্গন | ৭.৬৪ একর |
ক্রীড়া | ফুটবল, ক্রিকেট |
ওয়েবসাইট | www |
গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজ[১] চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার গাছবাড়িয়াতে অবস্থিত একটি সরকারি কলেজ। এটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে অবস্থিত।বর্তমানে এই কলেজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত।
অবস্থান
[সম্পাদনা]চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পশ্চিম পাশে চন্দনাইশ থানার গাছবাড়ীয়া গ্রামের ৭.৬৪ একর জমির উপর অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে এ কলেজের অবস্থান।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]দক্ষিণ চট্টগ্রামস্থ চন্দনাইশ উপজেলার গাছবাড়িয়া এলাকার শিক্ষানুরাগী সুধীজন, বিভিন্ন পেশাজীবী ও জ্ঞান তাপসের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৬৯ সালের ১ জুলাই গাছাবাড়িয়া কলেজে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠালগ্নে কলেজের নিজস্ব জমি না থাকায় গাছবাড়িয়া নিত্যানন্দ গৌর চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় অংশে পাঠদান শুরু হয়। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ কলেজটি সরকারি কলেজ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজ নিজস্ব জমিতে অনুষদভিত্তিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, দ্বিতল বিশিষ্ট লাইব্রেরী ভবন ও প্রশস্ত মাঠসহ সবুজে ঘেরা নান্দনিক পরিবেশে নতুন মহিমায় উদ্ভাসিত হয়। বর্তমানে এ কলেজ বৃহত্তর দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি স্বনামধন্য সরকারি কলেজ হিসেবে সুপরিচিত।[২]
অবকাঠামো
[সম্পাদনা]কলেজের নতুন ক্যাম্পাসের বিরাট এলাকা জুড়ে রয়েছে সুসজ্জিত চারটি বৃহৎ ভবন। এগুলো হলো প্রশাসনিক ভবন, বাণিজ্য ভবন, কলাভবন ও বিজ্ঞান ভবন। এছাড়াও রয়েছে দ্বিতল গ্রন্থাগার ভবন, শিক্ষকদের জন্য একটি নতুন ডরমেটরী ও পাম্প হাউজ। পুরনো ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের জন্যে জন্য একটি ডরমেটরী ও ছাত্রাবাস অবস্থিত।
- সেমিনার কক্ষ: অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা বিভাগে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য সুসজ্জিত সেমিনার কক্ষ রয়েছে। সেমিনার কক্ষ মূলবান বই এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে সমৃদ্ধ।
- ল্যাবরেটরি: বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি বিভাগে রয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ ল্যাবরেটরি।
- কম্পিউটার ল্যাব: কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্যে কলেজে বেশ কয়েকটি কম্পিউটার আছে। তাছাড়া আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দানের জন্য ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।
অনুষদসমূহ
[সম্পাদনা]- কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক (পাশ) শ্রেনিতে কলা, বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগে পাঠদান করা হচ্ছে। সহ-পাঠ কার্যক্রমও কলেজের একটি উল্লেখযোগ্য দিক।
অনার্স বিষয়: বর্তমানে অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে।হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ১৮০টি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়ে ১২০টি করে আসন রয়েছে। ভবিষ্যতে আসন সংখ্যা দ্বিগুন করার পরিকল্পনা আছে।
প্রস্তাবিত অনার্স বিষয়/মাস্টার্স কোর্স: এ কলেজের ৭টি বিষয়ে অনার্স চালু করার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন আছে। বিষয়গুলো হলো বাংলা, ইংরেজি, ইসলামের ইতিহাস ও সাংস্কৃতি, দর্শন, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত। অনার্স বিষয়গুলোর বিভাগে মাস্টার্স কোর্স চালু করা প্রক্রিয়াধীন।
সহশিক্ষা কার্যক্রম
[সম্পাদনা]কলেজ ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে আছে একটি বিস্তৃত খেলার মাঠ। এতে ছাত্ররা ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টনসহ সকল আউটডোর গেমস-এ অংশগ্রহণ করতে পারে। তাছাড়া ছাত্র-ছাত্রী মিলনায়তনে অভ্যন্তরীণ খেলাধুলার ব্যবস্থা আছে। বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদ্যাপন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং অন্তরঙ্গণ ও বহিরঙ্গণ ক্রীড়ানুষ্ঠান কলেজের পাঠ্যক্রমে বহির্ভূত কার্যক্রমের একটা উল্লেখ্যযোগ্য দিক।
- বি.এন.সি.সি: শৃংখলা ও দায়িত্ববোধ অর্জনের জন্য কলেজে বি.এন.সি.সি ক্যাডেট হিসেবে যোগদানের সুযোগ আছে। অংশগ্রহণকারী ক্যাডেটবৃন্দ সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ, সেনাবাহিনীর সাথে শীতকালীন মহড়া, সেনাবাহিনীতে যোগদান, দেশ বিদেশে ভ্রমণ, বিনা খরচে ইউনিফর্ম, স্নাতক পর্যায়ে সামরিক বিজ্ঞান পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে থাকে। গৌরবের বিষয় অতি সম্প্রতি এ কলেজের একজন বি.এন.সি.সি ক্যাডেট বি.এন.এ লং কোর্সে ভর্তি হবার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
- রোভার-স্কাউট: লেখাপড়ার পাশাপাশি একজন ছাত্রকে আদর্শ, চরিত্রবান, কর্মঠ ও আত্মনির্ভরশীল সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য রোভার স্কাউটের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এছাড়াও বিনামূল্যে রোভার পোশাকসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্কাউটের পক্ষ হতে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
বিবিধ
[সম্পাদনা]- ক্লাসে উপস্থিতি: ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে উপস্থিতির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাবোর্ডের বিধি বিধান কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে উপস্থিতি থাকা বাধ্যতামূলক।
- ভিজিল্যান্স টীম: সপ্তাহের প্রতিদিন আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রেনীকার্যক্রম তদারকি করার জন্যে অধ্যাপকের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স টীম কার্যকর রয়েছে।
- আর্থিক সাহায্য: কলেজে অধ্যয়নরত গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের দরিদ্র তহবিল থেকে বৃত্তি প্রদান করা হয়।
- পরীক্ষা: সাময়িক, বার্ষিক ও নির্বাচনী পরীক্ষাসমূহে ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। পরীক্ষার ফলাফল অভিভাবকদের নিকট পাঠানো হয়। টিউটোরিয়াল ও ক্লাস টেস্ট এ কলেজের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।
- নির্ধারিত পোশাক: ডিগ্রী পাস ও অনার্স কোর্সের ছাত্রদের হালকা নীল (আকাশী) শার্ট ও কালো ফুল প্যান্ট এবং ছাত্রীদের সাদা এপ্রোন ও আকাশী স্কার্ফ পরা বাধ্যতামূলক।
- ছাত্রাবাস: কলেজের পুরানো ক্যাম্পাসে রয়েছে একটি ছাত্রাবাস যেখানে প্রায় ৫০জন ছাত্র অবস্থান করতে পারে।
- শিক্ষক ডরমিটরী: ৫০সীটের একটি বাস ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের আনা-নেয়ায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
- অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের প্রস্তাবিত বাসভবন: অত্র কলেজে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের বাসভবন তৈরীর প্রস্তাব মন্ত্রাণালয়ে সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।
- গভীর টিউবওয়েল: ছাত্র-ছাত্রীদের সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য কলেজ ক্যাম্পাসে একটি গভীর টিউবওয়েল আছে।
- সাব পাওয়ার স্টেশন: এ কলেজে ২০০ কে.বি ক্ষমতা সম্পন্ন একটি সাবপাওয়ার স্টেশন রয়েছে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যে এ পাওয়ার স্টেশন স্থাপন করা হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "সরকারি কলেজের তালিকা"। ২০ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "কলেজ পরিচিতি"। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
Text is available under the CC BY-SA 4.0 license; additional terms may apply.
Images, videos and audio are available under their respective licenses.