For faster navigation, this Iframe is preloading the Wikiwand page for ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব.

ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব

ওয়েস্ট হ্যাম
পূর্ণ নামওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব
ডাকনামদ্য আয়রন্স
দ্য হ্যামার্স
প্রতিষ্ঠিত২৯ জুন ১৮৯৫; ১২৯ বছর আগে (1895-06-29)
থ্যামস আয়রনওয়ার্কস হিসেবে
৫ জুলাই ১৯০০; ১২৪ বছর আগে (1900-07-05)
ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব হিসেবে
মাঠলন্ডন স্টেডিয়াম
ধারণক্ষমতা৬২,৫০০[]
মালিকওয়েলস ডেভিড সালিভান (৫১.১%)
ইংল্যান্ড ডেভিড গোল্ড (৩৫.১%)
ইংল্যান্ড অ্যালবার্ট "ট্রিপ" স্মিথ (১০%)[]
অন্যান্য বিনিয়োগকারী (৩.৮%)[]
সভাপতিইংল্যান্ড ডেভিড সালিভান
ম্যানেজারইংল্যান্ড ডেভিড মইজ
লিগপ্রিমিয়ার লিগ
২০২২–২৩১৪তম
ওয়েবসাইটক্লাব ওয়েবসাইট
বর্তমান মৌসুম

ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব (ইংরেজি: West Ham United F.C.; সাধারণত ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড এফসি এবং সংক্ষেপে ওয়েস্ট হ্যাম নামে পরিচিত) হচ্ছে পূর্ব লন্ডন ভিত্তিক একটি ইংরেজ পেশাদার ফুটবল ক্লাব। এই ক্লাবটি বর্তমানে ইংল্যান্ডের শীর্ষ স্তরের ফুটবল লিগ প্রিমিয়ার লিগে প্রতিযোগিতা করে। এই ক্লাবটি ১৮৯৫ সালের ২৯শে জুন তারিখে টমাস আয়রনওয়ার্কস ফুটবল ক্লাব নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৬২,৫০০ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট লন্ডন স্টেডিয়ামে দ্য আয়রন্স নামে পরিচিত ক্লাবটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে।[] বর্তমানে এই ক্লাবের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন ইংরেজ সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় ডেভিড মইজ এবং সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ডেভিড সালিভান।[] বর্তমানে ফরাসি রক্ষণভাগের খেলোয়াড় কার্ত জুমা এই ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।[][]

ঘরোয়া ফুটবলে, ওয়েস্ট হ্যাম এপর্যন্ত ৭টি শিরোপা জয়লাভ করেছে; যার মধ্যে দুইটি প্রিমিয়ার লিগ, তিনটি এফএ কাপ এবং একটি এফএ চ্যারিটি শিল্ড শিরোপা রয়েছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়, এপর্যন্ত ৩টি শিরোপা জয়লাভ করেছে; যার মধ্যে একটি ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপ এবং একটি উয়েফা ইউরোপা কনফারেন্স লিগ শিরোপা রয়েছে। মার্ক নোবল, বিলি বন্ডস, ববি মুর, টনি কটি এবং মিখাইল অ্যান্টোনিওয়ের মতো খেলোয়াড়গণ ওয়েস্ট হ্যামের জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।

১৯৩২ এবং যুদ্ধ মধ্যবর্তী বছরসমূহ

[সম্পাদনা]

সিড কিঙ এবং চার্লি পাইণ্টারের জুটিতে ফাটল ধরে যখন ১৯৩২ সালে ক্লাবটি ডিভিশন টু তে অবনমিত (রেলিগেটেড) হয়। ফলে নতুন ম্যানেজার পাইণ্টার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন কিন্তু ক্লাবটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে আর শীর্ষ পর্যায়ে ফিরে আসতে পারেনি। পাইণ্টার দলটিকে আবারো সুসংগঠিত করার প্রচেষ্টা নিলেও তার পরিকল্পনা ধুলিস্মাং হয় যুদ্ধ শুরু হবার কারণে; যখন প্রথম একাদশ মাঠে নামানোই কঠিন হয়ে পড়ে। পাইণ্টার নিজেও বয়সের কারণে অবসর নেন। তবে সরকার জীবনযাপন যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখার প্রয়াস অব্যাহত রাখায় দলটি অতিথি খেলোয়াড়দের নিয়ে নিয়মিত খেলতে থাকে। লিগ কাপে অবশ্য অতিথি খেলোয়াড়দের অংশ নেয়ার নিয়ম ছিল না এবং ওয়েস্ট হ্যাম তাদের প্রথম ট্রফি জেতে ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে। ম্যাচটি উপভোগ করেন ডানকার্ক ইভাকুয়েশনের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া দর্শকরা।

ক্লাবটি তার পরবর্তী ৩০ মৌসুমের বেশির ভাগই চার্লি পাইণ্টারের অধীনে ডিভিশন টুতে কাটায়। চার্লি পাইণ্টারের পর দায়িত্ব গ্রহণ করেন টেড ফেনটন যিনি নামকরা খেলোয়াড়দের দলে ভিড়ান এবং নতুন প্রতিভাদের বের করে আনতে জোর দেন। ফলশ্রুতিতে ১৯৫৮ সালে দলটি আবার টপ ফ্লাইটে (প্রথম বিভাগে) ফিরে আসে যার পিছনে জন ডিকের গোল এবং ম্যালকম এলিসনের ডিভেন্সিভ প্রতিভার বিশেষ অবদান ছিল।

দলটি গড়ে ইংল্যান্ড জাতীয় দলের ত্রয়ী ডিফেণ্ডার ও দলনায়ক ববি মুর, মিডফিল্ডার মার্টিন পিটারস এবং গোলমুখে জেফ হার্স্টের মাধ্যমে যারা সবাই ফেনটনের যুবদল থেকে উঠে আসে। এছাড়াও ক্লাবের বহুদিনের সেবি জন বণ্ড, জাতীয় দলের খেলোয়াড় কেনি ব্রাউন, প্রতিভাবান উইং হাফ এডি বভিংটন, মিডমিল্ডার ও ফরোয়ার্ড রনি বয়েস, লেফট ব্যাক জ্যাক বার্কেট, দৃষ্টিনন্দিত স্ট্রাইকার জন ব্রাইন এবং কিছুটা কম আকর্ষণীয় ব্রায়ান ডিয়ার ও গোলরক্ষক জিন স্ট্যানডেন, উইঙে দলের পরবর্তী কোচ হ্যারি রেডক্ন্যাপ এবং দলের প্রথম কৃষ্ঞাঙ্গ খেলোয়াড় জন চার্লস।

হ্যারি রেডক্ন্যাপ যুগ: সংগঠন

[সম্পাদনা]

ম্যানেজার হিসেবে হ্যারি রেডক্ন্যাপের প্রথম কাজ ছিল স্ট্রাইকার টনি কোটিকে এভারটন থেকে পুনরায় দলে ভিড়ানো। তিনি লিভারপুল থেকে ডন হুচিসন এবং মাইক মার্স এবং জুলিয়ান ডাইকসকে ফেরত নিয়ে আসেন। এছাড়াও ইয়ান ডাউইকে সাউথহ্যাম্পটন থেকে ফিরিয়ে আনেন। রেডক্ন্যাপ দলে তরূণ প্রতিভাদের যুক্ত করবার চেষ্টা করেন এবং এর ফলস্বরুপ জোয়ি বিউক্যাম্পকে অক্সফোর্ড এবং তরুণ ট্যালেণ্ট ম্যাথিউ রুশ, স্টিভ জোনস এবং ম্যাটি হোমসকেও নিয়ে আসেন। কোটি ওয়েস্ট হ্যামে তার দ্বিতীয় যাত্রার শুভ সূচনা করেন এবং ট্রেভর মরলির সাথে শক্তিশালী পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। দলটি অবনমন সম্পর্কে সবার ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে ত্রয়োদশ স্থান নিয়ে লিগের সমাপ্তি ঘটায়। দলে যোগ দেন জন মনকার, যিনি অবনমিত দল সুইনডন থেকে আসেন।

ওয়েস্ট হ্যাম আবার ও রেলিগেশন কাটিয়ে ওঠে ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে। তারা মৌসুমের শেষ খেলায় আপটন পার্কে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে, যা তাদের স্বপ্ন পূরণের সাথে সাথে মানইউর টানা তৃতীয় শিরোপা স্বপ্ন শেষ করে দেয়। খেলা শুরুর আগে সবািই তাদের বাদ করে দিলেও অসাধারণ পারফরমেন্সে তারা লক্ষ অর্জনে অগ্রসর হয়।

১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে হ্যামারদের যাত্রা দূর্ঘটনার সম্মুখীন হয় সাদামাটা সূচনার পর। গুরুত্বপূর্ণ ও পরিপূরক খেলোয়াড়দের ইনজুরি বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। মার্ক হিউজের ফর্ম এবং হুগো প্রোফিরিওর পারফরম্যান্স তাদের জন্য স্বান্ত্বনা হয়ে থাকে। রিও ফার্ডিনান্ড এবং ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের উত্থান ও ছিল আশাজনক। বড়দিনে ৫ জয় এবং ৭ ড্র সহ ১৯ খেলা শেষে দলের অবস্থান ছিল মধ্যসারির নিচের দিকে। দলের অবস্থান আর ও সংকটজনক হয় যখন তারা পরবর্তী ৬ খেলার মাত্র একটিতে জয়লাভ করে। পয়েণ্ট টেবিলে এর ফলে তাদের অবস্থান হয় একদম শেষে।

অল্পের জন্য বেঁচে যাবার পরেও পরবর্তী মৌসুমে আকাঙ্খা ছিল অনেক বেশি। হার্টসন এবং কিটসন দলকে অসাধারণ আক্রমণভাগ উপহার দেন, যার সাথে মিডফিল্ডে সাউথহ্যাম্পটযোগ দেন এয়াল বারকোভিচ এবং কিউ.পি.আর থেকে যোগ দেন ট্রেভর সিনক্লেয়ার এবং এণ্ডি ইমপেই। দলকে অবশ্য পুরো মৌসুমের জন্য অধিনায়ক জুলিয়াস ডাইকসকে হারাতে হয় (যিনি শেষ মৌসুমে জরুরি হাঁটুর অপারেশনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও খেলে চলেন) এবং সেল্টিকে মার্ক রিপার এবং এভারটনে স্টিভেন বিলিচ চলে যাবার জন্য ও দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অবশ্য তাদের বিক্রি করার লাভ নষ্ট হয়নি কেননা দল ইংলিশ অনূর্ধ্ব-২১ দলের ডেভিড আনসওয়ার্থ এবং ইয়ান পিয়ার্স দলে যোগ দেন এভারটন এবং ব্ল্যাকবার্ন থেকে।

এই মৌসুমটি রেডক্ন্যাপের কৌশল পরিবর্তনের জন্য বিশেষায়িত হয়। দলটি তাদের পরিবর্তিত ৫-৩-২ ফরমেশনে খেলে মৌসুমের বেশির ভাগ সময়ে। এই কৌশলটি রেডক্ন্যাপকে তরূণ প্রতিভা রিও ফার্ডিন্যাণ্ডকে সূচীত করার সুযোগ দেয় তার পছন্দনীয় সুইপার পজিশনে। গতিশীল লাজারিডিস এবং ইমপেই উইংব্যাকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মধ্যমাঠ ল্যাম্পার্ড, লোমাস এবং বারকোভিচের ভারে থাকে এবং মনকারকে ইয়ান বিশপের উপরে গুরুত্ব দেয়া হয় এবং মাইকেল হিউজেসকে বেঞ্চে থাকতে হয়। গোলে মিকলোসকো শুরু করলেও ইনজুরি তার মৌসুমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে (এবং পরবর্তী গ্রীষ্মের আগেই কিউ.পি.আর এ চলে যান) এবং ক্রেইগ ফরেস্ট এগিয়ে আসেন। যা হোক, রেডক্ন্যাপ মোহনীয় বারনার্ড লামাকে ধারে প্যারিস সেণ্ট জার্মেইন থেকে নিয়ে আসেন এবং তার অসাধারণ প্রদর্শনী ওয়েস্ট হ্যামকে মৌসুম শেষে প্রেরণা যোগায়।

১৯৯৮-৯৯ মৌসুমের জন্য হ্যারি রেডক্ন্যাপ আন্তর্জাতিক খেলেয়াড় দলে নিয়ে আসেন। এদের মধ্যে ফ্রান্স জাতীয় দলের মার্ক কেলার, আক্রমণাত্মক ক্যামেরুনিয়ান মিডফিল্ডার মার্ক ভিভিয়েন ফো এবং বিশ্বকাপের তারকা হ্যাভিয়ের মার্জেস অন্যতম। তিনি অবশ্য স্থানীয় প্রতিভাদেরও অবহেলা করেননি এবং অভিগ্ঞ ইয়ান রাইট ও নেইল রুডককে আনেন। বিদেশ থেকে স্কট মিনটোকে ফিরিয়ে আনেন এবং ত্রিনিদাদ এণ্ড টোবাগোর গোলরক্ষক শাকা হিসলপকে বিনামূল্যে নিউক্যাসল থেকে দলে নিয়ে আসেন।

ওয়েস্ট হ্যামের সূচনা খারাপ হয় এবং বড়দিনের সময় আসতে আসতে তারা বেশ বিপদে পড়ে। প্রথমত ক্লাব এণ্ডি ইমপেইকে ম্যানেজারের মতের বিপরীতে বিক্রি করে দেয় এবং তারা তাকে পরিষ্কার করে দেয় যে হ্যাভিয়ের মার্জেসের অনুপস্থিতি তারা নতুন কোন বিদেশী খেলোয়াড় দলে আনতে পারবে না। এছাড়াও জন হার্টসন এয়াল বারকোভিচের সাথে ট্রেনিং মাঠে সমস্যায় জড়িয়ে পড়ার কারণে তাকে দল থেকে বাদ দেয়া হয়।

রেডক্ন্যাপকে ক্ষতিপূরণের জন্য কিছু অর্থ দেয়া হয় এবং তার প্রথম পছন্দ ছিলেন পাওলো ডি ক্যানিও। এছাড়াও তিনি প্রাক্তন ম্যান ইউর লক্ষ মার্ক ভিভিয়েন ফোকে মিডফিল্ড শক্তিশালী করার জন্য নিয়ে আসেন।

১৯৯৮-৯৯ মৌসুমের শেষে ওয়েস্ট হ্যাম সম্মানসূচকভাবে পঞ্চম স্থান অধিকার করে তবে উয়েফার নতুন শর্তানুযায়ী তারা উয়েফা কাপে খেলতে অসমর্থ হয় (তার আগের ও পরের মৌসুমে ৭ম হওয়া দলও উয়েফা কাপ খেলেছিল। অবশ্য তারা ইণ্টার টোটো কাপে অংশ নেবার মাধ্যমে উয়েফা কাপে খেলা নিশ্চিত করে এবং এর মাধ্যমে ইউরোপে খেলার জন্য তাদের বিশ বছরের প্রতিক্ষার অবসান হয়। রেডক্ন্যাপ পাবলো ওয়ানচোপকে দলে ভিড়ান এবং ইগর স্টিমাচকেও নিয়ে আসেন।

১৯৯৯-০০ মৌসুম ছিল দৃঢ়তা অর্জনের বছর। ইনজুরির সমস্যা এ মৌসুমজুড়ে থাকে অতিরিক্ত হিসেবে ইণ্টার টোটো কাপ এবং উয়েফা কাপ খেলার জন্য। মৌসুমের সূচনা ভাল হয় এবং দলটি টেবিলের মধ্যভাগে নিরাপদে অবস্থান নেয়। নবম স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করে প্রথমবারের মত তারা টানা তৃতীয়বার উপরের সারির দলগুলোর সাথে অবস্থান নেয়। মৌসুমে মূল দলে অভিষেক ঘটে জো কোল ও মাইকেল ক্যারিকের।

গ্লেন রোয়েডার যুগ: পুনরায় পতন

[সম্পাদনা]

কোচের খালি পদের জন্য বড় কোচের নাম শোনা যায়। ওয়েস্ট হ্যামের প্রাক্তন খেলোয়াড় এলান কার্বিসলি যিনি মাঠ ও মাঠের বাইরে ১৯৯১ সাল থেকে চার্লটন এথলেটিককে দাঁড় করিয়েছেন, পদটির জন্য ফেভারিট হলেও তার অনাগ্রহের কথা জানান। স্টিভ ম্যাকক্লারেন যিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের সময় তাদের সহকারী কোচ ছিলেন, ক্লাবের থেকে ডাক পেলেও সে সময় তিনি মিডলসবরোর কোচ হন। তাই ওয়েস্ট হ্যাম যুবদলের নামকরা কোচ গ্লেন রোয়েডারের শরণাপন্ন হতে হয়। রোয়েডার গিলিংহ্যাম ও ওয়াটফোর্ডএর সাথে ব্যর্থ সময় কাটালেও নিজেকে এ কাজের উপযুক্ত ঘোষণা করেন। ২০০১-০২ মৌসুমে ওয়েস্ট হ্যামের ধীরগতির সূচনা হয়, বড় খেলোয়াড়দের ইনজুরি সমস্যাও তাদের তাড়া করে। বোর্ড দলকে শক্তিশালী করার জন্য অর্থ বরাদ্দ করে এবং রোয়েডার জাতীয় চেক খেলোয়াড় টমাস রেপকা ও ডন হাডসনকে দলে নিয়ে আসেন। ফ্যানদের সমর্থন খুব দ্রুতই হারিয়ে ফেলেন তিনি এবং যখন দল এভারটন (৫-০) এবং ব্ল্যাকবার্ন (৭-১) এর কাছে বড় ব্যবধানে পরাজয়ের পর। সেখান থেকে তিনি দলকে ৭ম স্থানের সম্মানজনক সমাপ্তি এনে দেন। যা উয়েফা কাপে কোয়ালিফাই করার থেকে এক স্থান দুরে ছিল।

২০০২-০৩ মৌসুমের গ্রীষ্মে দলটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় বলতে কেবল জাতীয় আইরিশ খেলোয়াড় গ্যারি ব্রিনকে দলে ভিড়ান। খারাপভাবে সূচনা করার পর দ্রুতভাবে দলটি ফিরে আসতে ব্যর্থ হয়। জানুয়ারি মাসের আগ পর্যন্ত ঘরের মাঠে কোন ম্যাচ জিততে ব্যর্থ হয় তারা। তবে ট্রান্সফার জানালা খোলার পর লেস ফার্ডিন্যাণ্ড এবং রাফাস ব্রেভেটকে নিয়ে আসার পর এবং কানুটে ও ডি ক্যানিও ইনজুরি থেকে ফেরায় তাদের পারফরম্যান্সের ব্যাপক উন্নতি ঘটে।

এপ্রিল মাসে গ্লেন তার নিজের অফিসক্ষে অগ্ঞান হয়ে পড়ার পর জানতে পারা তার ব্রেইন টিউমার হয়েছে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ছুটি দেয়া হয় এবং সাবেক খেলোয়াড় ট্রেভর ব্রুকিংকে শেষ তিন খেলার জন্য ম্যানেজারের দায়িত্ব দেয়া হয়। শেষ ম্যাচগুলোর দুটিতে জয় ও একটিতে ড্র করলেও তারা বোল্টন ওয়াণ্ডারার্সের পিছনে থেকে ১৮ তম স্থান পায়। ফলস্বরূপ প্রিমিয়ারশিপে তাদের দশ বছরের যাত্রার বিরতি ঘটে। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুম থেকে কোন দল ৪০ পয়েণ্টের বেশি পেয়ে অবনমিত না হলেও ওয়েস্ট হ্যামকে সেই ভাগ্যবরণ করতে হয়। অবনমিত হবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তরুণ খেলোয়াড় জো কোল ও গ্লেন জনসনকে চেলসির কাছে এবঙ ট্রেভর সিনক্লেয়ার ও ডেভিড জেমসকে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় তারা। ২০০৩-০৪ মৌসুমের শুরুতে গ্লেন রোয়েডারকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

এলান পারডিউ যুগ: শীর্ষে প্রত্যাবর্তন

[সম্পাদনা]

এলান পারডিউ রোয়েডারের স্থলাভিষিক্ত হন ব্রুকিংয়ের দ্বিতীয় দফা অন্তর্বর্তীকালীন ম্যানেজার থাকার পর। পারডিউকে দুই মৌসুমের মধ্যে ক্লাবকে এফএ প্রিমিয়ার লিগ ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০০৪-০৫ মৌসুমে তার দল ষষ্ঠ স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করে যা তাদের প্রমোশনের জন্য প্লে-অফ খেলার যোগ্যতা অর্জনকারী সর্বশেষ স্থনটি দেয়। ইপসিচ টাউনকে দুই লেগের খেলায় হারিয়ে তারা ফাইনালে উন্নীত হয়। ফাইনাল খেলায় তারা প্রেসটন নর্থ এণ্ডকে ১-০ গোলে পরাজিত করে, খেলার একমাত্র গোলটি করেন ববি জামোরা। প্রিমিয়ার লিগে ফেরত এসে তারা তাদের টিকে থাকার লক্ষ অতিক্রম করে উত্তমার্ধে থেকে লিগ শেষ করে। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঘরের মাঠে চেলসির কাছে ৩-১ গোলে পরাজয়ের পর তারা টানা সাত ম্যাচে জয়লাভ করে (পাঁচটি প্রিমিয়ারশিপে, দুটি এফ এ কাপে), যা ক্লাবের নতুন রেকর্ড। উল্লেখযোগ্য জয় ছিল আর্সেনালের বিপক্ষে হাইবুরি মাঠে ৩-২ গোলে এফ এ কাপের জয়, যা ১৯৯৫ সালের পর থেকে এই ক্লাবের বিপক্ষে প্রথম।

টানা সাত ম্যাচের জয়ের পর তারা বোল্টন ওয়াণ্ডারার্সের সাথে ০-০ গোলে ড্র করে। প্রিমিয়ারশিপে তারা এভারটনের সাথে ২-২ গোলে ড্র করার পর লিগে আবার বোল্টনের কাছেই ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারে। এফ এ কাপের ফিরতি ম্যাচে আবার বোল্টনের মুখোমুখি হয়ে তারা তাদের পরাজিত করে ২-১ গোলে। এরপর তারা তাদের প্রাক্তন কোচ হ্যারি রেডক্ন্যাপের বিপক্ষে তাদের প্রথম ম্যাচে খেলে আপটন পার্কে। এফ এ কাপের পরবর্তী খেলায় তারা ম্যানচেস্টার সিটিকে ২-১ গোলে হারিয়ে এফ এ কাপের সেমিফাইনালে পৌছে যায়। মিডলসবরোর কাছে লিগে হারার সপ্তাহের মধ্যেই আবার তাদের পরাস্ত করে এফ এ কাপের সেমিফাইনালে এবং ১৯৮০ সালে আর্সেনালকে হারানোর পর থেকে প্রথমবারের মত তারা এফ এ কাপের ফাইনালে ওঠে। ২০০৬-০৭ মৌসুমের উয়েফা কাপের স্থান নিশ্চিত করার পর এফ এ কাপের ফাইনালে তারা লিভারপুরের প্রতিপক্ষ হয়। এফ এ কাপের ফাইনালের আগে তারা লিগে লিভারপুলের কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয়। লিগে ওয়েস্ট ব্রম ও টটেনহাম হটস্পারকে হারানোর পর ৯ম স্থানে থেকে তারা লিগ শেষ করে। টটেনহামের এই পরাজয়ে তাদের টপকে আর্সেনাল চ্যাম্পিয়নস খেলার জন্য মনোনীত হয়। এফ. এ. কাপের ফাইনালে শুরুতে ওয়েস্ট হ্যাম ৩-১ গোলে এগিয়ে যায়। ইনজুরি টাইমে লিভারপুলের অধিনায়ক স্টিভেন জেরার্ড দু'টি গোল করে দলকে সমতায় ফেরান এবং শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে জয় পায় লিভারপুল। ম্যাচটি মৌসুমের সেরা খেলার স্বীকৃতি লাভ করে। ২০০৬-০৭ মৌসুমে ওয়েস্ট হ্যাম আবারো দুর্বলভাবে শুরু করে। এফ. এ. কাপ ও উয়েফা কাপের প্রথম রাউণ্ড থেকে বিদায়ের পর তারা লিগেও নিচের সারিতে অবস্থান করে। এর মাঝে দলে যোগ দেন আর্জেণ্টাইন স্ট্রাইকার কার্লোস তেভেজ ও হ্যাভিয়ের মাসকেরানো। ব্রাজিলের ক্লাব করিন্হিয়ান্স থেকে তাদের ক্লাবে যোগ দেবার পিছনে অস্বচ্ছতা থাকে ও তা নিয়ে বিতর্কের শুরু হয়। এলান পারডিউ নিজেও এই বদলের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল ছিলেন না। নতুন খেলোয়াড়দের নিয়ে ওয়েস্ট হ্যামের খারাপ ফর্ম অপরিবর্তিত থাকে।

এলান কার্বিসলি: বেঁচে যাওয়া

[সম্পাদনা]

জানুয়ারির শুরু এলান পারডিউ বহিষ্কৃত হবার পর দলের হাল ধরেন এলান কার্বিসলি। একপর্যায়ে ২৮ খেলায় ২০ পয়েন্ট নিয়ে সর্বশেষ স্থানে চলে যেতে হয়। ২৯তম খেলায় আপটন পার্কে তারা মুখোমুখি হয় তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী টটেনহাম হটস্পারের। খেলার শুরুতেই অভিষিক্ত মার্ক নোবেলের গোলে এগিয়ে যায় ওয়েস্ট হ্যাম। বিপরীত ঠিক আগে ফ্রি কিক থেকে গোল করে দলকে ২-০ তে এগিয়ে দেন কার্লোস তেভেজ যা ছিল ওয়েস্ট হ্যামের জার্সি গায়ে তার প্রথম গোল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই খেলায় ফিরে আসে টটেনহাম জার্মেইন ডিফো এবং আরন লেননের দু’গোল তারা সমতা ফেরায়। খেলার শেষ প্রান্তে এসে তেভেজের ফ্রি কিকে হেড লাগিয়ে গোল করেন বদলি হিসেবে নামা ববি জামোরা। ৯০ মিনিটের মাথায় ফ্রি কিক থেকে সমতা ফেরান ডিমিটার বারবাটভ এবং অতিরিক্ত সময়ে টটেনহাম জয় নিশ্চিত করে, খেলাটি মৌসুমের সেরা খেলার মর্যাদা লাভ করে। ৯ খেলা বাকি থাকতে ওয়েস্ট হ্যাম সবার পিছনে অবস্থান নেয়। তবে পরের তিন ম্যাচে টানা জয় পেয়ে তারা টিকে থাকার সম্ভাবনা জিইয়ে রাখে। তখনো সর্বশেষ স্থানে থাকা ওয়েস্ট হ্যাম ঘরের মাঠে চেলসির কাছে ৪-১ গোলে পরাজিত হয়। আবার টানা দুই ম্যাচ জিতে প্রথমবারের মত অবনমন এলাকা থেকে উঠে আসে। তবে মৌসুমের শেষ খেলায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এর বিপক্ষে পরাজিত হলে বাদ পড়তে হতে পারে এমন আশঙ্কায় তারা ওল্ড ট্রাফোর্ডে যায়। তারা ছাড়াও উইগান এথলেটিক ও শেফিল্ড ইউনাইটেড এর মধ্যে যে কোন একটি দল বাদ পড়বে এমন পরিস্থিতিতে তিনটি খেলা একসঙ্গে শুরু হয়। প্রথমার্ধে তেভেজের গোলে ওয়েস্ট হ্যাম ১-০ গোলে এগিয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত স্কোরলাইন ধরে রেখে লিগে টিকে থাকা নিশ্চিত করে। তাদের অবস্থান হয় ১৫তম। তেভেজকে অবৈধভাবে দলে নেয়া হয়েছে বলে পয়েণ্ট কেটে নেয়া উচিত বলে দাবি করে অবনমিত শেফিল্ড ইউনাইটেড। তাদের দাবি ফিফা পর্যন্ত গড়ালে, ফিফার তদন্তের পর ফলাফল বহাল থাকে। অবশ্য তেভেজকে নিয়ম ভেঙ্গে দলে নেবার জন্য ওয়েস্ট হ্যামকে ৫.৫ মিলিয়ন পাউণ্ড জরিমানা করা হয়।

ওয়েস্ট হ্যমের ক্রেস্ট

[সম্পাদনা]

ক্লাবের আসল ক্রেস্ট ছিল দু’টি হাতুরির ক্রস আকৃতির জুটি, যেগুলো জাহাজ প্রস্তুতির জন্য ব্যবহৃত হত। ক্রেস্টটিতে একটি প্রাসাদ যোগ করা হয় ১৯০০ সালের দিকে যা নামকরা স্থানীয় স্থাপনা, গ্রিন স্ট্রিট হাউস যা “বোলেইন ক্যাসল” নামে পরিচিত তার প্রতিনিধিত্ব করে। দুর্গসহ প্রাসাদটির ছবি বোলেইন ক্যাসলের প্রতিনিধিত্ব করে, যা কাঁটাচিহ্নিত হাতুড়ির পিছন দিকে অবস্থিত। ক্যাসলটি যোগ করার কারণ হতে পারে ওয়েস্ট হ্যামের জন্য ওল্ড ক্যাসল সুইফটস এফ. সি ক্লাবের খেলোয়াড়দের অবদান। ক্রেস্টটির নকশার পুণরাঙ্কন করা হয় ১৯৯০ এর দিকে লন্ডনের নকশাকারী প্রতিষ্ঠান স্প্রিংগেট এজেন্সির মাধ্যমে। পরিবর্তিত নকশাটিতে প্রাসাদটিতে আরও প্রশস্ত করার পাশাপাশি জানালার সংখ্যা কমানো হয় এবং হাতুড়ির মাথার গঠন পরিবর্তন করা হয়।

টেমস আয়রনওয়ার্কসের রং গোলাপী এবং আকাশী নীল হবার কারণে ধারণা করা হয় এস্টন ভিলার জামা অনুসারে ওয়েস্ট হ্যামের জামা তৈরি করা হয়েছিল। ঘরের মাঠের জামার গায়ের ইয়কের রং গোলাপী এবং হাতা নীল থাকলেও এওয়ে শার্টের রং পরিবর্তন হয়েছে বছর ধরে। সাধারণত এটি সাদা এবং আকাশী নীল ছিল, তবে গাঢ় নীল এবং এক্রু ও ব্যবহৃত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আকাশী-সাদা-কালো-নীল রঙের ভিতরে তা ঘুরেছে। অবশ্য প্রত্যেক রংই আলাদাভাবে মাত্র এক মৌসুমের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। ২০০৬-০৭ মৌসুমের জন্য এর রং ছিল গাঢ় নীল যা দুর থেকে দেখলে কালো মনে হত। রেলিগেশনের ফাঁড়ায় পড়ার সমূহ সম্ভাবনার জন্য বোর্ড দুটি গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্ভুক্তির জন্য অর্থ বরাদ্দ করে। আর্সেনালের তরূণ স্ট্রাইকার জন হার্টসনকে তারা দলে ভিড়ায় ৩.৩ মিলিয়ন পাউণ্ড দিয়ে (যা ছিল নতুন ক্লাব রেকর্ড) এবং নিউক্যাসলের ফরোয়ার্ড পল কিটসন দলে যোগ দেন। নতুন স্ট্রাইকার জুটি শুরুতেই সাফল্য এনে দেন এবং দু’জনে মিলে তাদের পরবর্তী ১২ খেলায় ১৩ গোল করেন। ফলস্বরুপ তারা তাদের নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী টটেনহ্যামকে ৪-৩ গোলে, চেলসিকে ৩-২ গোলে ও শেফিল্ড ওয়েন্সডেকে ৫-১ গোলে হারিয়ে এক ম্যাচের খেলা বাকী থাকতেই দলের টিকে থাকা নিশ্চিত করে ও এর সাথে রেডক্ন্যাপের চাকরিও বেঁচে যায়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

প্রাতিষ্ঠানিক

অপ্রাতিষ্ঠানিক

{{bottomLinkPreText}} {{bottomLinkText}}
ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব
Listen to this article

This browser is not supported by Wikiwand :(
Wikiwand requires a browser with modern capabilities in order to provide you with the best reading experience.
Please download and use one of the following browsers:

This article was just edited, click to reload
This article has been deleted on Wikipedia (Why?)

Back to homepage

Please click Add in the dialog above
Please click Allow in the top-left corner,
then click Install Now in the dialog
Please click Open in the download dialog,
then click Install
Please click the "Downloads" icon in the Safari toolbar, open the first download in the list,
then click Install
{{::$root.activation.text}}

Install Wikiwand

Install on Chrome Install on Firefox
Don't forget to rate us

Tell your friends about Wikiwand!

Gmail Facebook Twitter Link

Enjoying Wikiwand?

Tell your friends and spread the love:
Share on Gmail Share on Facebook Share on Twitter Share on Buffer

Our magic isn't perfect

You can help our automatic cover photo selection by reporting an unsuitable photo.

This photo is visually disturbing This photo is not a good choice

Thank you for helping!


Your input will affect cover photo selection, along with input from other users.

X

Get ready for Wikiwand 2.0 🎉! the new version arrives on September 1st! Don't want to wait?