হ্যাচারি
হ্যাচারি (ইংরেজি: Hatchery) বলতে এমন এক ধরনের জলাশয়কে বোঝায় যেখানে মাছের পোনা উৎপাদন করা হয়। হ্যাচারি হলো এক ধরনের মৎস্য খামার যেখানে প্রজনন মাছ রাখার পুকুর থাকে এবং সেখান থেকে প্রজনন মাছ গুলোকে ডিম ছাড়া, ডিম ফুটানো, শুক ও শুকোত্তর পোনা লালনের ব্যবস্থা থাকে।[১]
প্রাকৃতিক উপায়ে নদ-নদী থেকে সংগৃহীত পোনাতে অনেক জীব প্রজাতির লার্ভা বা পোনা মিশ্রিত থাকে। এছাড়া প্রাকৃতিক পোনার উৎস সমূহ দিন দিন কমে যাচ্ছে মনুষ্য সৃষ্ট বিপর্যয় এর কারণে। তাই মৎস্য চাষ করতে হলে চাষযোগ্য মাছের পোনা উৎপাদন অপরিহার্য। আর পোনা উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন হ্যাচারি।
হ্যাচারির উপাদান
[সম্পাদনা]হ্যাচারি তৈরির প্রথম শর্তই হলো স্থান নির্বাচন। যে সব স্থানের মাটিতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে, পুকুরে সারা বছর পানি থাকে, পানি সরবরাহ বা নিস্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে, পানির গুনাগুন মৎস্য চাষের উপযোগী ও যাতায়াতের ভালো ব্যবস্থা থাকে, সেখানে হ্যাচারি স্থাপন করা যায়।[২] এ ছাড়া হ্যাচারিতে উৎপাদিত পোনার জন্য আশে পাশে চাহিদা থাকতে হবে। হ্যাচারি নির্মাণ করার জন্য প্রয়োজনী উপকরণাদি ও মাছের খাদ্য সরবরাহ সুনিশ্চিত এবং পরিবেশ দুষণমুক্ত হলেই কেবল হ্যাচারি নির্মাণ করা যেতে পারে।
হ্যাচারির মডেল
[সম্পাদনা]হ্যাচারি বিভিন্ন মডেলের হয়। তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হ্যাচারি হলো:[৩]
- চাইনিজ হ্যাচারি: এটি সিমেন্টের তৈরি একটা বৃত্তাকার জলাধার যার মধ্যে জল নিরবচ্ছিন্ন ভাবে বৃত্তপথে প্রবাহিত হতে থাকে।
- গ্লাস জার হ্যাচারি: এটি একটি সুনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা যার মধ্যে অনেক কাচের তৈরি জার থাকে। প্রতি জারে প্রায় ৫০ হাজার মতো ডিম রাখা হয় এবং নলের সাহায্যে জলপ্রবাহের মাধ্যমে ডিম ফোটানো হয়।
- সিমেন্টর তৈরি জলাধার হ্যাচারি: এই ধরনের হ্যাচারিতে সিমেন্টের তৈরি প্রায় ৫ বর্গমিটার ও ১ মিটার গভীরতা যুক্ত চতুষ্কোণ চৌবাচ্চা থাকে। প্রতিটি চৌবাচ্চাতে ২০টি করে হ্যাচিং জাল জলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখা হয়। জালের মধ্যে নিষিক্ত ডিমগুলোকে ছড়িয়ে দিতে হয়। ডিম এখানে জলের আন্দোলনের প্রস্ফুটিত হয় এবং ডিমপোনাগুলো চৌবাচ্চার মধ্যে সঞ্চিত হয়।
হ্যাচারির বিভিন্ন অংশ
[সম্পাদনা]আধুনিক হ্যাচারিতে কার্প জাতীয় ও অন্যতম মাছের কৃত্রিম প্রজনন করা হয় ফলে মূল হ্যাচারিতে কৃত্রিম প্রজননের সবরকম সুবিধাদি থাকা প্রয়োজন।[৪] আধুনিক মূল হ্যাচারির অংশগুলো হলো:
- মজুদ চৌবাচ্চা
- প্রজনন চৌবাচ্চা
- ডিম ফুটানোর চৌবাচ্চা
- শুক লালনের চৌবাচ্চা
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ হোসেন, ড. মোঃ আলতাফ। ফলিত প্রাণিবিজ্ঞান - চাষ ও খামার ব্যবস্থাপনা। ঢাকা: মল্লিক ব্রাদার্স।
- ↑ রহ্মপুত্র ফিস সীড কমপ্লেক্স (হ্যাচারি) শম্ভুগঞ্জ, ময়মনসিংহ, এ. কে. এম. নূরুল হক। "মৎস্য পোনা, খাদ্য ও পুকুর ব্যবস্থাপনা"। এগ্রোবাংলা ডটকম। ১৭ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ মৎস্য দফতর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার। "হ্যাচারি — বিকাশপিডিয়া"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ মহসিন, এ বি এম। "রুই জাতীয় মাছ চাষের বর্ষপঞ্জী: মৎস্য হ্যাচারি ব্যবস্থাপনা"। BdFISH Bangla।
Text is available under the CC BY-SA 4.0 license; additional terms may apply.
Images, videos and audio are available under their respective licenses.