সূরা গাশিয়াহ্
শ্রেণী | মাক্কী সূরা |
---|---|
নামের অর্থ | বিহ্বলকর ঘটনা |
পরিসংখ্যান | |
সূরার ক্রম | ৮৮ |
আয়াতের সংখ্যা | ২৬ |
পারার ক্রম | ৩০ |
রুকুর সংখ্যা | নেই |
সিজদাহ্র সংখ্যা | নেই |
← পূর্ববর্তী সূরা | সূরা আ’লা |
পরবর্তী সূরা → | সূরা ফাজ্র |
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ
|
সূরা আল গাশিয়াহ্ (আরবি ভাষায়: اَلْغَاشِيَةِ) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৮৮ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ২৬; তবে এতে কোন রূকু তথা অনুচ্ছেদ নেই। সূরা আল গাশিয়াহ্ মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।
নামকরণ
[সম্পাদনা]এই সূরাটির প্রথম আয়াতের اَلْغَاشِيَةِ বাক্যাংশ থেকে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, যে সূরার মধ্যে اَلْغَاشِيَةِ (‘আল গাশিয়াহ্’) শব্দটি আছে এটি সেই সূরা।[১]
নাযিল হওয়ার সময় ও স্থান
[সম্পাদনা]এ সূরাটির সমগ্র বিষয়বস্তু একথা প্রমাণ করে যে এটিও প্রথম দিকে অবতীর্ণ সূরাগুলোর অন্তরভুক্ত। কিন্তু এটি এমন সময় নাযিল হয় যখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাধারণের মধ্যে ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন এবং মক্কায় লোকেরা তার দাওয়াত শুনে তার প্রতি উপেক্ষা প্রদর্শন করতে থাকে।[১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে
বিষয়বস্তুর বিবরণ
[সম্পাদনা]বিষয়বস্তু অনুধাবন করার জন্য একথাটি অবশ্যি সামনে রাখতে হবে যে , ইসলাম প্রচারের প্রথম দিকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রধানত দু’টি কথা লোকদেরকে বুঝাবার মধ্যেই তার দাওয়াত সীমাবব্ধ রাখেন। একটি তাওহীদ ও দ্বিতীয়টি আখেরাত। আর মক্কাবাসীরা এই দু’টি কথা মেনে নিতে অস্বীকার করতে থাকে। এই পটভূমিটুকু অনুধাবন করার পর এবার এই সূরাটির বিষয়বস্তু ও বর্ণনা পদ্ধতি সম্পর্কে চিন্তা - ভাবনা করুন।
এখানে সবার আগে গাফলতির জীবনে আকণ্ঠ ডুবে থাকা লোকদেরকে চমকে দেবার জন্য হঠাৎ তাদের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়েছে : তোমরা কি সে সময়ের কোন খবর রাখো যখন সারা দুনিয়ার ওপর ছেয়ে যাবার মতো একটি বিপদ অবতীর্ণ হবে ? এরপর সাথে সাথেই এর বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া শুরু হয়েছে। বলা হয়েছে , সে সময় সমস্ত মানুষ দু’টি ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে দু’টি ভিন্ন পরিণামের সম্মুখীন হবে। একদল জাহান্নামে যাবে। তাদের উমুক উমুক ধরনের ভয়াবহ ও কঠিন আযাবের সম্মুখীন হতে হবে। দ্বিতীয় দলটি উন্নত ও উচ্চ মর্যাদার জান্নাতে যাবে। তাদেরকে উমুক উমুক ধরনের নিয়ামত দান করা হবে।
এভাবে লোকদেরকে চমকে দেবার পর হঠাৎ বিষয়বস্তু পরিবর্তিত হয়ে যায়। প্রশ্ন করা হয় , যারা কুরআনের তাওহীদী শিক্ষা ও আখেরাতের খবর শুনে নাম সিটকায় তারা কি নিজেদের চোখের সামনে প্রতি মুহূর্তে যেসব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে সেগুলো দেখে না ? আরবের দিগন্ত বিস্তৃত সাহারায় যেসব উটের ওপর তাদের সমগ্র জীবন যাপন প্রণালী র্ভিরশীল তারা কীভাবে ঠিক মরু জীবনের উপযোগী বৈশিষ্ট ও গুণাবলী সম্পন্ন পশু হিসেবে গড়ে উঠেছে , একথা কি তারা একটুও চিন্তা করে না ? পথে সফর করার সময় তারা আকাশ , পাহাড় বা বিশাল বিস্তৃত পৃথিবী দেখে । এই তিনটি জিনিস সম্পর্কেই তারা চিন্তা করে না কেন ? মাথার ওপরে এই আকাশটি কেমন করে ছেয়ে গেলো ? সামনে ওই পাহাড় খাড়া হলো কেমন করে ? পায়ের নিচে এই যমীন কীভাবে বিছানো হলো ? এসব কিছুই কি একজন মহাবিজ্ঞ সর্বশক্তিমান কারিগরের কারিগরী তৎপরতা ছাড়াই হয়ে গেছে ? যদি একথা মেনে নেয়া হয় যে , একজন সৃষ্টিকর্তা বিপুল শক্তি ও জ্ঞানের সাহায্যে এই জিনিসগুলো তৈরি করেছেন এবং দ্বিতীয় আর কেউ তার এই সৃষ্টি কর্মে শরীক নেই তাহলে তাকেই একক রব হিসেবে মেনে নিতে তাদের আপত্তি কেন ? আর যদি তারা একথা মেনে নিয়ে থাকে যে সেই আল্লাহর এসব কিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতা ছিল , তাহলে সেই আল্লাহ কিয়ামত সংঘটিত করার ক্ষমতাও রাখেন , মানুষের পুর্নবার সৃষ্টি করার ক্ষমতাও রাখেন এবং জান্নাত ও জাহান্নাম বানাবার ক্ষমতাও রাখেন -- এসব কথা কোন যুক্তি প্রমাণের ভিত্তিতে মানতে ইতস্তত করছে ?
এ সংক্ষিপ্ত ও অত্যন্ত শক্তিশালী যুক্তি প্রমাণের ভিত্তিতে বক্তব্য বুঝানো হয়েছে। এরপর কাফেরদের দিক থেকে ফিরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করা হেয়েছে । তাকে বলা হয়েছে , এরা না মানতে চাইলে না মানুক , তোমাকে তো এদের ওপর বল প্রয়োগকারী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়নি । তুমি জোর করে এদের থেকে স্বীকৃতি আদায় করতে পারো না। তোমার কাজ উপদেশ দেয়া। কাজেই তুমি উপদেশ দিয়ে যেতে থাকো। সবশেষে তাদের অবশ্যি আমার কাছেই আসতে হবে । সে সময় আমি তাদের কাছ থেকে পুরো হিসেব নিয়ে নেব। যারা মানেনি তাদেরকে কঠিন শাস্তি দেবো।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "সূরার নামকরণ"। www.banglatafheem.com। তাফহীমুল কোরআন, ২০ অক্টোবর ২০১০। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৫।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ডিজিটাল 'আল কোরআন' - ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ
- কোরআন শরীফ.অর্গ
Text is available under the CC BY-SA 4.0 license; additional terms may apply.
Images, videos and audio are available under their respective licenses.