For faster navigation, this Iframe is preloading the Wikiwand page for রামপাল.

রামপাল

রামপাল
পাল সম্রাট
রাজত্ব১০৮২–১১২৪
পূর্বসূরিশূরপাল দ্বিতীয়
উত্তরসূরিকুমারপাল
দাম্পত্য সঙ্গীমদন দেবী[][]
বংশধরকুমারপাল
রাজবংশপাল সাম্রাজ্য
পিতাবিগ্রহপাল তৃতীয়

রামপাল দেব বাংলার পালবংশের (রাজত্বকাল ৭৫০-১১৫৪ খ্রিস্টাব্দ) পতনের কালে অন্যতম উল্লিখিত নাম; রামচরিতের বর্ণনা থেকে অনুমিত হয় যে দ্বিতীয় শূরপালকে কোনও উপায়ে সংহার করে তিনি পৈত্রিক রাজ্যাধিকার প্রাপ্ত হয়েছিলেন।[] রামপালের অভিষেক কালে পালরাজাদের রাজ্যপাট বোধহয় ভাগীরথী ও পদ্মার মধ্যবর্তী বদ্বীপে সীমাবদ্ধ হয়েছিল; কারণ রামপালকে কৈবর্ত বিদ্রোহের নেতা দিব্বোকের রাজ্য উত্তরবঙ্গ অধিকারের জন্য ভাগীরথীর উপরে নৌকামেলক বা নৌ-সেতুবন্ধন করতে হয়েছিল।[] রামপাল,শূরপালের মৃত্যুর পর যখন গৌড়ের সিংহাসন অধিকার করেন তখন দিব্বোকের ভ্রাতুষ্পুত্র ভীম গৌড়ের মসনদে আসীন ছিলেন। দিব্বোকের পর অনুমান করা হয় তার ভ্রাতা রূদোক গৌড়ের অধিকার প্রাপ্ত হয়েছিলেন, পরে তাঁর পুত্র ভীম উত্তরাধিকার সূত্রে উত্তরবঙ্গের সিংহাসন আরোহণ করেছিলেন। []
সেইসময় রামপাল অত্যন্ত হতাশ হয়ে পড়েছিলেন । তাঁর পুত্র রাজ্যপাল ও অন্যান্য আমাত্যগণ রাজ্যের বিভিন্ন কাজকর্ম সম্পর্কে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতেন । এমনকী রামপাল কিছুদিনের জন্য ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন, তাঁর বনময় রাজ্যগুলির সামন্তগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করেছিলেন । ভ্রমণ শেষে রামপাল বুঝতে পারেন যে তাঁর ব্যবহারে আমাত্যগণ সন্তুষ্ট হয়েছেন তাই তিনি পদাতিক, অশ্ব ও গজারোহী সৈন্য সংগ্রহ করেন ; আর এর জন্য তাঁকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়েছিল।

তিন প্রকার সৈন্য সংগ্রহ করে রামপালদেবের মাতুল-পুত্র রাষ্ট্রকূট-বংশীয় শিবরাজদেব রামপালের আদেশে সেনা নিয়ে গঙ্গা পার হয়েছিলেন । মহাপ্রতিহার শিবরাজদেব কৈবর্ত রাজ্যে অবস্থিত বিভিন্ন গ্রামগুলি আক্রমণ করলে কৈবর্ত নায়ক ভীমের প্রজাগণ বিপন্ন হয়ে পড়ে । শিবরাজ বরেন্দ্রী হতে ভীমের রক্ষকগণকে বিতাড়িত করেছিলেন । শিবরাজের এই বরেন্দ্রী অধিকার দীর্ঘকাল স্থায়ী হয়নি, কেননা কিছুদিন পরেই আবার রামপালকে বহু সেনা নিয়ে বরেন্দ্রী আক্রমণ করতে হয়েছিল । বারেন্দ্র-অভিযানে মগধ ও পিঠীর অধিপতি ভীমযশঃ, কোটাটবীর বীরগুণ, দণ্ডভুক্তি-রাজ জয়সিংহ, দেবগ্রাম-প্রতিবদ্ধ বালবলভীর বিক্রমরাজ, অপরমন্দারের অধিপতি এবং আটবিক সামন্তচক্রের প্রধান লক্ষ্মীশূর, কুজবটীর শূরপাল, তৈলকম্পের রুদ্রশেখর, উচ্ছালের অধিপতি ময়গলসিংহ, ঢেক্করীয়-রাজ প্রতাপসিংহ , কৌশাম্বীপতি দ্বোরপবর্ধন প্রমুখ সামন্তগণ এবং রাজ্যপাল সহ রামপালের অন্যান্য পুত্রগণ পিতার সঙ্গে যুদ্ধযাত্রা করেছিলেন ।[]

ব‌রেন্দ্র অঞ্চ‌লে রামাবতী নগ‌রে রামপা‌লের রাজধানী স্থা‌পিত হয়।

সামন্তগণের পরিচিতি

[সম্পাদনা]
আদিলপুরের তাম্রশাসন

১ . মগধ ও পিঠীর অধিপতি ভীমযশ রামচরিতের টীকায় "কান্যকুব্জরাজবাজিনীগণ্ঠনভুজঙ্গ" নামে অভিহিত ।[] সম্ভবত কান্যকুব্জ-রাজ তাঁর দ্বারা পরাজিত হয়েছিলেন; তবে সেই সময় কোন রাজা কান্যকুব্জের সিংহাসনে আসীন ছিলেন তা সঠিক জানা যায় না। প্রতিহার বংশীয় ত্রিলোচনপালের পর চেদি-বংশীয় কর্ণদেব বোধহয় কিছুদিনের জন্য কান্যকুব্জের সিংহাসনে বসেছিলেন; কারণ গাহডবাল-বংশীয় গোবিন্দচন্দ্রদেবের একখানি তাম্রশাসনে পাওয়া যায় যে, ভোজদেব ও কর্ণদেবের পর চন্দ্রদেব পৃথিবীর অধীশ্বর হয়েছিলেন।[] পিঠী দক্ষিণ মগধের প্রাচীন নাম, আবার গোবিন্দদেবের পত্নী কুমরদেবীর শিলালিপির পাঠোদ্ধার করে ডঃ স্টেইন কোনো ( Sten Konow ) অনুমান করেন পিঠী মাদ্রাজ প্রদেশের পিট্টপুরমের প্রাচীন নাম।[] রামচরিতের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের অষ্টম শ্লোকের টীকায় পাওয়া যায় যে, মথনদেব বিন্ধ্যমাণিক্য নামক হস্তিপৃষ্ঠে আরোহণ করে পিঠী ও মগধের অধিপতিকে পরাজিত করেছিলেন।[১০]

২. কোয়াটবীর রাজা বীরগুণ: রামচরিতের টীকাতে বীরগুণ সম্বন্ধে বলা হয়েছে ‘দক্ষিণ সিংহাসনে চক্রবর্তী’;নগেন্দ্রনাথ বসুর মতে এটি বিশাল অরণ্যানী-বেষ্টিত উড়িষ্যার গড়জাত প্রদেশ। আইন-ই-আকবরীতে এই স্থান কটক সরকারের অন্তর্গত ‘কোটদেশ’ বলেই অভিহিত হয়েছে।[১১] রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই মত সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু উড়িষ্যায় রামপালের বা তাঁর পিতার রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত সামন্তশাসিত কোনো রাজ্য ছিল এর কোনো প্রমাণ নেই। বিষ্ণুপুরের পূর্বে কোটেশ্বর নামক গ্রামের সাথে এর নামসাদৃশ্য আছে। শ্রীযুক্ত পঞ্চানন মণ্ডলের মতে অজয় নদের দক্ষিণ তীরে বর্ধমান জেলার ও আউসগ্রাম থানার অন্তর্গত ভল্কীকোট গ্রামই প্রাচীন কোটাটবী, কারণ এই অঞ্চলকে এখনও কোটার জঙ্গল বলা হয়।

৩. দণ্ডভুক্তির রাজা জয়সিংহ: দণ্ডভুক্তি মেদিনীপুর জেলার দক্ষিণভাগে অবস্থিত ছিল। ইনি উড়িষ্যার রাজা কর্ণকেশরীকে পরাজিত করেছিলেন।

৪. বিক্রম: রামচরিতে শুধু এই নামটি আছে, টীকাতে এঁকে বিক্রমরাজ বলা হয়েছে। টীকাকারের ভাষ্যে ‘দেবগ্রাম প্রতিবদ্ধ’ ও ‘বালবলভী তরঙ্গ’, এই দুইটি শব্দ আছে। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এর অর্থ করেছিলেন যে বিক্রমরাজ দেবগ্রামের রাজা ছিলেন এবং এর চারিপার্শ্ব বালবলভী দেশের নদী দ্বারা বেষ্টিত ছিল। তাঁর মতে বালবলভী প্রাচীন বাগড়ীর (মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা) নাম। শ্রীরাধাগোবিন্দ বসাক বলেন যে, বালবলভী একটি নদীর নাম এবং বিশাল তরঙ্গ-বহুল নদীদ্বারা বেষ্টিত থাকায় রাজধানী দেবগ্রাম সুরক্ষিত ছিল। দেবগ্রামের অবস্থিতি সম্পর্কে কেউ কেউ ধারণা করেন: কলিকাতা-লালগোলা রেলওয়ে লাইনে কলিকাতার শিয়ালদহ স্টেশন হতে ১৪০ কিলোমিটার দূরে দেবগ্রাম নামক স্টেশনের আধ মাইল দূরে দেবগ্রাম নামক গ্রামই খুব সম্ভব প্রাচীন দেবগ্রাম।

৫. ‘নগেন্দ্রনাথ বসু নদীয়া জেলার একটি গ্রামকে চিহ্নিত করেছেন।[১২] রমেশচন্দ্র মজুমদার দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলার সুবর্ণরেখা নদীর মুখে পিপলী গ্রামকে চিহ্নিত করেছেন।[১৩] সম্পাদিত ‘বর্ধমানের পুরাকথা’ নামক গ্রন্থে এই স্থানের অনেক প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের বিবরণ আছে।

৬. লক্ষ্মীশূর: তিনি হুগলী জেলার অন্তর্গত অপারমন্দারের অধিপতি ছিলেন। [১৩] শ্রীপঞ্চানন মণ্ডল বলেন যে, বর্তমান গড়মান্দারণ নামক গ্রাম হুগলী জেলার আরামবাগ হতে নয় মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। নলিনী দাশগুপ্ত এই মত গ্রহণ করেন নি। তাঁর মতে বর্তমান দেওঘর, বৈদ্যনাথ এবং অপর মন্দার অর্থাৎ ভাগলপুরের ৩০ মাইল দক্ষিণে মন্দার পর্বতের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত অরণ্যসঙ্কুল ‘অপর-মন্দার’ প্রদেশেই লক্ষ্মীশূরের রাজ্য ছিল। প্র ম মহীপালের সমসাময়িক রণশূর দক্ষিণ রাধা শাসন করতেন। লক্ষ্মীশূর এক বংশীয় হতে পারেন। বিজয়সেন যে শূর বংশে বিবাহ করেছিলেন,[১৪] হয়তো এরাই সেই বংশের। জানা যায় যে, লক্ষ্মীশূর পার্বত্য এলাকার সামন্তদের প্রধান ছিলেন।[১৫]

৭. কুব্জবটির রাজা শূরপাল: কুব্জবটি সাঁওতাল পরগনার অন্তর্ভুক্ত নয়া দুমকার ১৪ মাইল উত্তরে অবস্থিত ছিল।[১৬]

৮. তৈলকম্পের (মানভূম) রাজা রুদ্রশিখর: বিহারের মানভূম জেলার তেলকুপিই প্রাচীন তৈলকম্প।[১৬]

৯. উচ্ছালের রাজা ভাস্কর অথবা মদকলসিংহ: পূর্বে বীরভূম জেলার অন্তর্গত ‘জৈনউঝিয়াল’ পরগনার নামই উচ্ছাল বলে গৃহীত হতো। শ্রীপঞ্চানন মণ্ডল বলেন যে, এটি বর্ধমান জেলার উছলান গ্রাম। এটিই অধিকতর সঙ্গত বলে মনে করেছেন ঐতিহাসিক রমেশ মজুমদার, কিন্তু অনেকেই দ্বিমত পোষণ করেছেন।[১৭]

১০. ঢেক্করীরাজ প্রতাপসিংহ: কাটোয়ার নিকটবর্তী বর্ধমান জেলায় অবস্থিত বলে জানা যায়।[১৬]

১১. কয়ঙ্গলমণ্ডলের অধিপতি নরসিংহাসর্জুন: এর বর্তমান নাম কাঙ্গজোল- এটি বর্তমান রাজমহলের ২০ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত।

১২. সঙ্কটগ্রামের রাজা চণ্ডার্জুন: শ্রীপঞ্চানন মণ্ডলের মতে বর্ধমান জেলার রায়না থানার অন্তর্গত সংকট নামক গ্রাম হতে শক্তিগড় পর্যন্ত বিস্তৃত ভূভাগই প্রাচীন সংকট রাজ্য। আইন-ই-আকবরীতে সাতগাঁও সরকারের অন্তর্গত সকোট পরগনার উল্লেখ পাওয়া যায়। সম্ভবত বল্লাল চরিতের সংককোট এবং তবকাত-ই-নাসিরীর সঙ্কনাৎ ও এই সংকট গ্রাম অভিন্ন।[১৮]

১৩. নিদ্রাবলীর রাজা বিজয়রাজ: সম্ভবত সেনবংশীয় রাজা বিজয় সেন। বিজয় সেন ও বিজয়রাজ অভিন্ন বলে গ্রহণ করলে নিদ্রাবলী পশ্চিম বাংলায় অবস্থিত ছিল। বল্লালসেন নৈহাটী তাম্রশাসন থেকে আমরা জানতে পারি যে, তাদের পূর্বপুরুষ রাধা রাজ্যে প্রথমে বসতি স্থাপন করে।

১৪. কৌশাম্বীর রাজা দ্বোরপবর্ধন: কৌশাম্বী সম্ভবত রাজশাহী অথবা বগুড়া জেলায় অবস্থিত ছিল। কেউ কেউ একে ভাগীরথীর পূর্ববতীরে কলিকাতার দক্ষিণে অবস্থিত বলে মত প্রকাশ করেছেন। শ্রীপঞ্চানন মণ্ডল বর্ধমান জেলার কালনা মহকুমার অন্তর্গত কুসুমগ্রামই রামচরিতের কোশাম্বী বলে মত প্রকাশ করেছেন।

১৫. পদুবন্বার রাজা সোম: ঐতিহাসিকদের কেউ কেউ হুগলী, পাবনা অথবা দিনাজপুর চিহ্নিত করেছেন।[১৯] খুব সম্ভব হুগলী জেলার অন্তর্গত পাউনান পরগনা প্রাচীন পদুবন্বার স্মৃতি বহন করছে বলে আচার্য মজুমদার চিহ্নিত করেছেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তা বর্তমান পাবনা নগরীর প্রাচীন নাম হতে পারে এরূপ মত প্রকাশ করেছিলেন।

বরেন্দ্র বিদ্রোহ

[সম্পাদনা]

পালরাজত্বকালে কৈবর্তনায়ক দিব্বোকের নেতৃত্বে যে অভ্যুথান ঘটেছিল তাতে পালরাজ দ্বিতীয় মহীপাল পরাজিত ও নিহত হয়েছিলেন । রামচরিতের একটি শ্লোকে এরূপ ইঙ্গিত আছে যে দিব্বোক মহীপালের অধীনে উচ্চরাজকার্যে আসীন ছিলেন।[২০] রামচরিতে দিব্বোককে দস্যু ‘উপধিব্রতী’ বলা হয়েছে। টীকাকার উপধিব্রতীর অর্থ করেছেন ‘ছদ্মনিব্রতী’; কেউ কেউ এ থেকে সিদ্ধান্ত করেছেন যে, দিব্বোক কর্তব্যবশে বিদ্রোহী সেজে মহীপালকে হত্যা করেছিলেন। কিন্তু এ-কথা যুক্তিযুক্ত মনে হয় না। দস্যু ও উপধিব্রতী হতে বরং এটিই মনে হয় যে, রামচরিতকারের মতে দিব্বোক প্রকৃতই দস্যু ছিলেন; কিন্তু দেশহিতের মোড়কে রাজাকে হত্যা করেছিলেন। বস্তুত রামচরিত কাব্যের অন্যত্রও দিব্বোকের আচরণ কুৎসিত ও নিন্দনীয় বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিছুদিন পর্যন্ত বাংলার একদল লোক বিশ্বাস করতেন যে, দিব্বোক অত্যাচারী মহীপালকে বধ করে দেশকে রক্ষা করেছিলেন এবং তাঁর এই মহৎ কার্যের জন্য জনসাধারণ কর্তৃক রাজা নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁরা দিব্বোককে মহাপুরুষ সাজিয়ে উত্তরবঙ্গের নানা স্থানে প্রতি বছর ‘দিব্যস্মৃতি উৎসবের’ ব্যবস্থা করতেন। কিন্তু রামচরিতে এর কোনো সমর্থনই পাওয়া যায় না। অবশ্য পালরাজগণের কর্মচারী সন্ধ্যাকর নন্দী দিব্বোক সম্বন্ধে বিরুদ্ধভাব পোষণ করতেন, এটি খুবই স্বাভাবিক; কিন্তু রামচরিত ব্যতীত দিব্বোক সম্বন্ধে জানার আর কোনো উপায়ও নেই। সুতরাং রামচরিতকার তাঁর চরিত্রে যে কলঙ্ক লেপন করেছেন, তা পুরোপুরি সত্য বলে গ্রহণ না করলেও দিব্বোককে দেশের ত্রাণকর্তা মহাপুরুষ মনে করার কোনোই কারণ নেই। বস্তুত মহীপাল যে প্রজাপীড়ক বা অত্যাচারী রাজা ছিলেন এবং এই জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়েছিল এরূপ মনে করার কোনো কারণ নেই। আর এই বিদ্রোহকে কৈবর্ত জাতির বিদ্রোহ বলে চিহ্নিত করাও সঙ্গত নয়। দিব্বোক কৈবর্তজাতীয় ছিলেন কিন্তু তিনি যে এই জাতির উপর রাজার অত্যাচারের জন্য মহীপালের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন রামচরিতে এর সমর্থনে কোনো উক্তি বা প্রমাণ পাওয়া যায় না। এ ধরনের বিদ্রোহ সে যুগে প্রায়ই ঘটত। রামচরিতে বলা হয়েছে যে, রামপাল ‘নৃপতি-শ্রেষ্ঠ (মহীপালের) হত্যাকারী (কৈবর্ত রাজার) নিরাময়তা নষ্ট করেছিলেন।’ এ হতে মনে হয় যে, দিব্বোকই মহীপালকে বধ করেছিলেন।[২১]

রামপালের মৃত্যু

[সম্পাদনা]

সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিত হতে জানা যায় যে, বর্ম্মবংশীয় জনৈক রাজা আত্মরক্ষার জন্য নিজের হস্তী ও রথ রামপালকে উপহার দিয়েছিলেন। বর্ম্মবংশীয় এই রাজার এমন আচরণের কারণ হতে পারে যে, রামপাল কর্তৃক বঙ্গ আক্রমণ এবং সেনবংশীয় সামন্তসেন কর্তৃক বঙ্গদেশ অধিকার। বৃদ্ধবয়সে রামপালদেব তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র রাজ্যপালের হাতে রাজ্যভার অর্পণ করে রামাবতীতে বাস করছিলেন।[২২] মুঙ্গের অবস্থানকালে রামপালদেব তাঁর মাতুল মথনদেবের মৃত্যু সংবাদ শ্রবণ করে অত্যন্ত কাতর হয়ে পড়েন[২৩] এবং ব্রাহ্মগণকে বহু ধন দান করে গঙ্গাবক্ষে সলিলসমাধি গ্রহণ করেন।[২৪]

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]
  • গৌড়লেখমালা ।
  • গৌড়রাজমালা ।
  • V. A. Smith, Early History of India, 3rd Edition.
  • Cunninghum, Archaeological Survey Reports. Vol. III.
  • বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস, রাজন্যকাণ্ড ।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Verma, O.P. (১৯৬৩)। "Matrimonial alliances of Pala rulers"Indian History Congress: Proceedings of the twenty-fourth session। Delhi: 63। 
  2. "দৈনিক জনকন্ঠ নিবন্ধ ॥ রাজরানী"দৈনিক জনকন্ঠ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-২১ 
  3. Journal and Proceedings of the Asiatic Society of Bengal. Vol. X. P. 126; Epigraphia Indica, Vol. XII. PP. 39-41.
  4. Memories of the Asiatic Society of Bengal, Vol. III.P. 14.
  5. রামচরিত, ১/৩৯, ১/৩৮,
  6. রামচরিত, ২/৭ টীকা ।
  7. রামচরিত, ২/৫ টীকা ।
  8. Indian Antiquary. Vol. XIV, P.103.
  9. Epigraphia Indica, VOL. IX. p.304.
  10. রামচরিত, ২/৮ টীকা ।
  11. আর,ডি, ব্যানার্জী: বাংলার ইতিহাস, প্র ম খন্ড, পৃ. ২৮৭।
  12. বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস: রাজন্য কাণ্ড, পৃ. ১৯৮।
  13. আচার্য রমেশচন্দ্র মজুমদার: বাংলাদেশের ইতিহাস, ১ম খন্ড, পৃ. ১৫৭;
  14. Epigraphia Indica, vol. XV, pp. 283,285.
  15. রামচরিত: শ্লোক নং- ২/৫।
  16. History of Bengal, vol. I, p. 157.
  17. এন,এন, ভাসু এবং আর,ডি, ব্যানার্জী দ্বিমত পোষণ করেছেন।
  18. আচার্য রমেশচন্দ্র মজুমদার: বাংলাদেশের ইতিহাস (প্রাচীন যুগ), পৃ. ৮৯।
  19. History of Bengal, vol. I, p. 158.
  20. রামচরিত, ১/৩৯
  21. রামচরিত, ১/২৯
  22. রামচরিত, ৪/১ , টীকা ।
  23. রামচরিত, ৪/৮-৯, টীকা ।
  24. রামচরিত, ৪/১০, টীকা ।
{{bottomLinkPreText}} {{bottomLinkText}}
রামপাল
Listen to this article

This browser is not supported by Wikiwand :(
Wikiwand requires a browser with modern capabilities in order to provide you with the best reading experience.
Please download and use one of the following browsers:

This article was just edited, click to reload
This article has been deleted on Wikipedia (Why?)

Back to homepage

Please click Add in the dialog above
Please click Allow in the top-left corner,
then click Install Now in the dialog
Please click Open in the download dialog,
then click Install
Please click the "Downloads" icon in the Safari toolbar, open the first download in the list,
then click Install
{{::$root.activation.text}}

Install Wikiwand

Install on Chrome Install on Firefox
Don't forget to rate us

Tell your friends about Wikiwand!

Gmail Facebook Twitter Link

Enjoying Wikiwand?

Tell your friends and spread the love:
Share on Gmail Share on Facebook Share on Twitter Share on Buffer

Our magic isn't perfect

You can help our automatic cover photo selection by reporting an unsuitable photo.

This photo is visually disturbing This photo is not a good choice

Thank you for helping!


Your input will affect cover photo selection, along with input from other users.

X

Get ready for Wikiwand 2.0 🎉! the new version arrives on September 1st! Don't want to wait?