ফকির মোহন সেনাপতি
উৎকল ব্যাস কবি ফকির মোহন সেনাপতি | |
---|---|
স্থানীয় নাম | ଫକୀର ମୋହନ ସେନାପତି |
জন্ম | মল্লিকাশপুর, বালেশ্বর, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানওড়িশা, ভারত) | ১৩ জানুয়ারি ১৮৪৩
মৃত্যু | ১৪ জুন ১৯১৮ বালেশ্বর, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান ওড়িশা, ভারত)[১] | (বয়স ৭৫)
পেশা | ঔপন্যাসিক, গল্পকার,কবি,দার্শনিক এবং সমাজ সংস্কারক |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | রেবতী ছয় একর এবং তৃতীয়টি উৎকল ভ্রমণম আত্ম জীবন চরিত |
স্বাক্ষর |
ফকির মোহন সেনাপতি (ওড়িয়া: ଫକୀର ମୋହନ ସେନାପତି; ১৩ জানুয়ারী ১৮৪৩ - ১৪ জুন ১৯১৮), যাঁকে প্রায়শই উৎকল ব্যাস কবি (ওড়িশার বেদব্যাস) ছিলেন একজন ভারতীয় লেখক, কবি, দার্শনিক এবং সমাজ সংস্কারক। তিনি ওড়িয়া ভাষার স্বতন্ত্র পরিচয় প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন, এটি মূলত ভারতের ওড়িশা রাজ্যে কথিত একটি ভাষা। ফকিরমোহন সেনাপতি ওড়িয়া জাতীয়তাবাদ এবং আধুনিক ওড়িয়া সাহিত্যের জনক হিসাবে বিবেচিত।
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]মধ্যবিত্ত খন্দায়াত পরিবারে লক্ষ্মণ চরণ সেনপতি এবং তুলসী দেবী সেনাপতির ঘরে ফকির মোহন সেনাপতির জন্ম হয় । তাঁর যখন দেড় বছর বয়স তখন তাঁর বাবা মারা যান। চৌদ্দ মাস পরে তাঁর মাও মারা যান । শৈশব থেকে তাঁর দেখাশোনা করতেন তাঁর পিতামহী ।
ফকির মোহনের কাকা ছোটো ভ্রাতুষ্পুত্রকে হিংসা করতেন তাঁর লেখাপড়া করার অনুমতি দেননি। তাঁর দুর্বল স্বাস্থের জন্যও তিনি পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়েন । শিশুশ্রমিক হিসাবে কাজ করে তার শিক্ষাগত ব্যয়ভার বহন করেছিলেন।
ফকির মোহন উনিশ শতকের শেষ এবং বিশ শতকের গোড়ার দিকে ওডিয়া ভাষার অগ্রগতির জন্য তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাকে ওড়িয়া কথাসাহিত্যের জনক বলা হয়। তাঁর স্মৃতিতে তাঁর জন্মস্থানে ফকির মোহন কলেজ এবং ফকির মোহন বিশ্ববিদ্যালয় নির্মিত হয় ।
পারিবারিক জীবন
[সম্পাদনা]১৮৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে লীলাবতী দেবীকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু তিনি ২৯ বছর বয়সে মারা যান । ১৮৭১ সালের গ্রীষ্মে, তিনি কৃষ্ণ কুমারী দেবীকে বিয়ে করেন, যিনি ১৮৯৪ সালে একটি পুত্র এবং একটি কন্যা রেখে মারা যান।
সাহিত্যকর্ম
[সম্পাদনা]উপন্যাস:-
মায়াধর মানসিংহ ,ফকির মোহনকে 'ওড়িশার টমাস হার্ডি' হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। যদিও তিনি সংস্কৃত থেকে অনুবাদ করেছেন, কবিতা লিখেছেন এবং সাহিত্যের বিভিন্ন রূপের চেষ্টা করেছেন, তিনি বর্তমানে মূলত আধুনিক ওড়িয়া গদ্য কথাসাহিত্যের জনক হিসাবে পরিচিত। ১৮৯৭ থেকে ১৯১৫-এর মধ্যে রচিত তাঁর চারটি উপন্যাস আঠারো ও উনিশ শতকের ওড়িশার সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিস্থিতির প্রতিফলন ঘটায়। ছা মন আট গুন্থা, মামু এবং প্রয়াশিতা এই তিনটি উপন্যাস সামাজিক জীবনের বাস্তবতাকে একাধিক মাত্রায় আবিষ্কার করেছেন, 'লাচ্মা' অষ্টাদশ শতাব্দীতে মারাঠা আক্রমণের পরে ওড়িশার নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে । ঐতিহাসিক রোম্যান্স ছা মানা আট গুন্থা প্রথম ভারতীয় উপন্যাস যা সামন্ত প্রভুর ভূমিহীন কৃষকদের শোষণকে মোকাবেলা করেছিল। এটি রাশিয়ার অক্টোবর বিপ্লবের বা ভারতে মার্কসবাদী ধারণার উত্থানের অনেক আগেই রচিত হয়েছিল। ফকির মোহন ওড়িয়ায় প্রথম আত্মজীবনীর লেখক, "আত্মা জীবন চারিতা"।
ছোটগল্প :-
তাঁর "রেবতী" (১৮৯৮) প্রথম ওড়িয়া ছোট গল্প হিসাবে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। এটি একটি অল্প বয়স্ক নিষ্পাপ মেয়ের গল্প, যার পড়াশুনার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে কিন্তু সে ঘাতক মহামারী কলেরায় আক্রান্ত হয় উপন্যাসটিকে পশ্চাৎপদ ওড়িশা গ্রামের একটি রক্ষণশীল সমাজের প্রেক্ষাপটে স্থান দেওয়া হয়েছিল, । তাঁর অন্যান্য গল্পগুলি হ'ল "পেটেন্ট মেডিসিন", "দাকা মুন্সী", "অধর্ম বিট্টা" ইত্যাদি। তাঁর ছোটগল্পগুলি "গল্প স্বল্প -১ এবং ২" বইয়ে সংকলিত।
কবিতা:-
তিনি একটি দীর্ঘ কবিতা লিখেছিলেন, উৎকল ভ্রমণম, যা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৯২ সালে যার আক্ষরিক অর্থে ওড়িশার ভ্রমণ, এই কবিতাটি বাস্তবে কোনও ভ্রমণকাহিনী নয়, তদানীন্তন উড়িষ্যার রাজ্য সম্পর্কিত একটি ভাষ্য যা বিদ্রুপাত্মক ভঙ্গিতে লেখা হয়েছিল ।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]১) ফকির মোহন সেনাপতি; রবি শঙ্কর মিশ্র , উনিশ শতকের উপন্যাস সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর,২০০৫[পূর্ণ তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]Text is available under the CC BY-SA 4.0 license; additional terms may apply.
Images, videos and audio are available under their respective licenses.