For faster navigation, this Iframe is preloading the Wikiwand page for আসাম আন্দোলন.

আসাম আন্দোলন

আসাম আন্দোলন (ইংরেজি:Assam Movement or Assam Agitation) হচ্ছে ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে অবৈধ অণুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে অসমীয়া মানুষের করা আন্দোলন। ইহাকে স্বাধীন ভারতের অন্যতম আন্দোলন হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। সদৌ আসাম ছাত্র সন্থা ও সদৌ আসাম গণ সংগ্রাম পরিষদ এই আন্দোলনের নেতৃত্ব বহন করেছিল।[] প্রথম অবস্থায় এই আন্দোলন অহিংসা রূপে আরম্ভ হয়েছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত নেলীর হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে হিংসাত্মক রূপ ধারণ করেছিল। ১৯৮৫ সালে আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও ভারত সরকারের মধ্যে হওয়া চুক্তির ফলে আসাম আন্দোলন সমাপ্ত হয়েছিল। চুক্তির পর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নেতারা একত্রিত হয়ে আসাম গণপরিষদ নামক রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি করেন। ১৯৮৫ সাল ও ১৯৯৬ সালে এই দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়েছিল।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের বাংলাদেশ মুক্তি যুদ্ধের সময় বহুসংখ্যক মানুষ ভারত তথা অসমে আশ্রয় নিয়েছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেকে বাংলাদেশ ফিরে গেলেও অনেকে এখানেই থেকে যান। ১৯৭৮ সালে প্রথমবার অণুপ্রবেশকারীর সমস্যা অসমের স্থানীয় লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ১৯৭৮ সালের ২৮ মার্চে লোকসভার সদস্য হীরালাল পাটোয়ারীর মৃত্যুর ফলে মঙ্গলদৈ লোকসভা সমষ্টিতে উপ-নির্বাচনের প্রয়োজন হয়। ১৯৭৮ সনের ২৭ এপ্রিল ভোটার তালিকা সংশোধন কার্যে জানা যায় যে মঙ্গলদৈ সমষ্টিতে ৪৫০০০ সন্দেহযুক্ত বাংলাদেশী ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত আছে।[] ১৯৭৯ সালের মার্চ মাসে সদৌ অসম ছাত্র সন্থার সভায় প্রফুল্ল কুমার মহন্ত ও ভৃগু কুমার ফুকন ক্রমে সভাপতি ও সম্পাদকের পদে নিযুক্ত হন। ১৯৭৯ সালের ২৭ জুন সদৌ সদৌ অসম ছাত্র সংস্থার নেতৃত্বে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অণুপ্রবেশকারীর সমস্যার সমন্ধে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। উক্ত সভায় জাতীয়তাবাদী দল অসমে অণুপ্রবেশকারীর সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অসমে নির্বাচন বন্ধ করার জন্য সরকারকে অণুরোধ জানান।[] সদৌ অসম ছাত্র সংস্থা “বিদেশী বহিস্কারের” দাবিতে আন্দোলন করার সিন্ধান্ত নেয়। ফলে ১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শ্রেণী বর্জন ও ধর্ণা কার্যসূচী পালন করা হয়। অন্যদিকে মুখ্য নির্বাচন আয়োগ ১৯৭৮ সালের ভোটার তালিকা মতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য আদেশ দেন। বিদেশী অন্তর্ভুক্ত তালিকায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য অসমের স্থানীয় ব্যক্তিরা ক্ষিপ্ত হয় ও হিংসাত্মক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ১৯৮০ সালের ১০ ডিসেম্বর নির্বাচনে আবেদেনকারী প্রার্থীকে বাধা দেওয়ার ফলে ভবানীপুরে খড়্গেশ্বর তালুকদারের মৃত্যু হয়েছিল। তিনি ছিলেন আসাম আন্দোলনের প্রথম শহীদ।[] আসাম আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ্র ও তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই সমন্ধে একটি আলোচনা সভার আ্য়োজন করেছিলেন। আন্দোলনকারীরা ১৯৫১ সালের ভোটের তালিকাকে ভিত্তি করে বিদেশী বহিস্কারের দাবি জানায় কিন্তু ভারত সরকার ১৯৬৬ সালের ভোটের তালিকাকে ভিত্তি করার প্রস্তাব দেন ফলে আলোচনা অসমাপ্ত থাকে। ১৯৮০ সালের শেষের দিকে কেন্দ্রীয় সরকার এই আন্দোলনের প্রতি কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন। এই সময়ে অসমের বিভিন্ন স্থানে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে থাকে। ১৯৮৩ সালে জনসাধারণের কঠোর বিরোধ থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ও নির্বাচনে হিতেশ্বর শইকিয়া মুখ্যমন্ত্রী হন। এই আন্দোলনে অসমের নগাওয়ের নেলী নামক স্থানে অবৈধ বাংলাদেশী ব্যক্তিদের হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ড নেলীর হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। নেলীর হত্যাকাণ্ডে প্রায় ১৮০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল ও আন্দোলনের সময়ে ৮৫৫ জন ছাত্র সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল।[] ১৯৮৪ সনে ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী এই সমন্ধে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেন। অবশেষে ১৯৮৫ সনের ১৫ আগস্ট আন্দোলনকারী নেতা ও রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লীতে অসম চুক্তি সাক্ষর করেন।

অসম চুক্তি

[সম্পাদনা]

অসম চুক্তির শর্তগুলো হচ্ছে:

  • ১৯৬১ সালের পুর্বে বাংলাদেশ থেকে অসমে আসা ব্যক্তিদের পূর্ননাগরিকত্ব প্রদান ও ভোটাধিকারের সুবিধা প্রদান।
  • ১৯৬১ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে অসমে আসা ব্যক্তিদের ভোটাধিকার সুবিধা বাতিল করা ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা প্রদান করা ।
  • ১৯৭১ সালের পরে অসমে আসা বাংলাদেশী ব্যক্তিদের শনাক্ত করা ও অসম থেকে বহিষ্কার করা ।

অসম চুক্তির পর হিতেশ্বর শইকিয়ার নেতৃত্বে থাকা সরকার পদত্যাগ করেন ও আন্দোলনকারী নেতারা একত্রিত হয়ে অসম গণ পরিষদ নামক রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি করেন। ১৯৮৫ সালের নির্বাচনে এই দল সংখ্যাগরিষ্ঠ লাভ করে সরকার গঠন করেন ও প্রফুল্ল কুমার মহন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হন।

আসাম আন্দোলনের ফলাফল

[সম্পাদনা]

আসাম আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য ছিল অবৈধ অণুপ্রবেশকারীর সমস্যা সমাধান করা। এই সমস্যা এখনও সম্পূর্ণ রূপে সমাধান হয়নি যদিও এই চুক্তিতে কিছু শর্ত রুপায়ন করা হয়েছে। এইগুলি হচ্ছে:

  • নাগরিকত্ব অধিনিয়ম ১৯৫৫, নাগরিকত্ব নিয়মাবলী ১৯৫৬ ও বিদেশী ন্যায়াধিকরন নির্দেশ ১৯৬৪ সংশোধন।
  • ১১টি বিদেশী ন্যায়াধিকরন স্থাপন ও বিশেষ পজ্ঞীয়ন বিষয়া নিয়োগ
  • গুয়াহাটিতে শ্রীমন্ত শংকরদেব কলাক্ষেত্র স্থাপন
  • জ্যোতি চিত্রবনের আধুনিকীকরন
  • নুমলীগড় শোধানাগার স্থাপন
  • তেজপুর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিলচর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন
  • ভারতীয় প্রদ্যোগিক প্রতিষ্ঠান গুয়াহাটি স্থাপন
  • ডিব্রুগড়ে গ্যাস ক্রেকার প্রকল্প নির্মাণ ইত্যাদি।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. [১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ জুলাই ২০১১ তারিখে Digital NorthEast
  2. সংক্ষিপ্ত অসমীয়া বিশ্বকোষ (প্রথম খণ্ড), শান্তনু কৌশিক বরুয়া
  3. [২] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে It is 26 years since Nellie massacre:victims still await justice
{{bottomLinkPreText}} {{bottomLinkText}}
আসাম আন্দোলন
Listen to this article

This browser is not supported by Wikiwand :(
Wikiwand requires a browser with modern capabilities in order to provide you with the best reading experience.
Please download and use one of the following browsers:

This article was just edited, click to reload
This article has been deleted on Wikipedia (Why?)

Back to homepage

Please click Add in the dialog above
Please click Allow in the top-left corner,
then click Install Now in the dialog
Please click Open in the download dialog,
then click Install
Please click the "Downloads" icon in the Safari toolbar, open the first download in the list,
then click Install
{{::$root.activation.text}}

Install Wikiwand

Install on Chrome Install on Firefox
Don't forget to rate us

Tell your friends about Wikiwand!

Gmail Facebook Twitter Link

Enjoying Wikiwand?

Tell your friends and spread the love:
Share on Gmail Share on Facebook Share on Twitter Share on Buffer

Our magic isn't perfect

You can help our automatic cover photo selection by reporting an unsuitable photo.

This photo is visually disturbing This photo is not a good choice

Thank you for helping!


Your input will affect cover photo selection, along with input from other users.

X

Get ready for Wikiwand 2.0 🎉! the new version arrives on September 1st! Don't want to wait?