আরামবাগ, ঢাকা
আরামবাগ | |
---|---|
শহর | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৪৪′ উত্তর ৯০°২৫′ পূর্ব / ২৩.৭৩° উত্তর ৯০.৪২° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
নগর | ঢাকা |
জেলা | ঢাকা জেলা |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | রাশেদ খান মেনন |
• মেয়র | শেখ ফজলে নূর তাপস |
• ওয়ার্ড কাউন্সিলর | মোজাম্মেল হক[১] |
সংসদীয় আসন | ঢাকা-৮ আসন |
সিটি কর্পোরেশন | ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন |
সিটি কর্পোরেশন ওয়ার্ড | ০৯ নং ওয়ার্ড |
পুলিশ অঞ্চল | ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ |
থানা | মতিঝিল থানা |
আরামবাগ বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকার একটি এলাকা। নানা কারণে এলাকাটির দেশব্যাপী পরিচিতি ও গুরুত্ব রয়েছে, যেমন- এটি বাংলাদেশের মুদ্রণশিল্পের সূতিকাগার ও অন্যতম প্রধান কেন্দ্র; দেশসেরা ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নটর ডেম কলেজ, ঢাকা[২] এবং শীর্ষস্থানীয় ফুটবল ক্লাব আরামবাগ ক্রীড়া সংঘসহ একাধিক ক্রীড়া সংগঠনের সদরদপ্তরের অবস্থান[৩]; দেশের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল ও কেন্দ্রীয় রেলস্টেশন কমলাপুর রেলস্টেশনের মাঝামাঝি এলাকাটির অবস্থান প্রভৃতি।
নামকরণ
[সম্পাদনা]মোঘল সংস্কৃতির ধারায় বাগ বা বাগান গড়ে তোলা এক সময় ঢাকা শহরের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছিল। তাই ঢাকা শহরের অনেক এলাকার নামে বাগ শব্দটি খুঁজে পাওয়া যায়, যেমন- শাহবাগ, লালবাগ, রাজারবাগ, মালিবাগ, গোপীবাগ, সোবাহানবাগ প্রভৃতি। এ রকমই একটি বাগানসমৃদ্ধ এলাকা ছিল আরামবাগ । বাগ বা বাগানে প্রচুর গাছ থাকায় রৌদ্র-তাপে শ্রান্ত মানুষ এর নিচে আশ্রয় পেয়ে এবং ফল খেয়ে বেশ আরাম পেত। এ থেকেই এর নাম আরামবাগ হয়েছে বলে মনে করেন ঐতিহাসিকরা। আরামবাগ বর্তমানের অতি ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকা হলেও এর বাগ নামটি মুছে যায়নি।[২]
অর্থনৈতিক গুরুত্ব
[সম্পাদনা]প্রেসপাড়া, মেসপাড়া, আদমপাড়া, ক্লাবপাড়া নামে খ্যাতি আছে আরামবাগের। স্বাধীনতার আগে আরামবাগ নির্ভেজাল আবাসিক এলাকা ছিল। পরবর্তীকালে সেখানে একটার পর একটা প্রিন্টিং প্রেস চালু হতে থাকে। ফলে এলাকাটির আবাসিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে গেছে অনেক আগে। বর্তমানে আরামবাগে রয়েছে সহস্রাধিক প্রিন্টিং প্রেস, কাটিং-বাইন্ডিং কারখানা, কাগজ-কালি, কম্পিউটার ও গ্রাফিকস ডিজাইনের দোকান। সারা দিন-রাত ধরেই তাদের কাজ চলে। বছরে এই মহল্লায় কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হয় কেবল মুদ্রণশিল্পকে ঘিরে। এসব কারণে আরামবাগ খ্যাত হয়েছে প্রেসপাড়া হিসেবে।
মতিঝিল-দিলকুশার অফিসপাড়া হওয়ায় এবং নটর ডেম কলেজে সারা দেশ থেকে আসা ছাত্রদের চাহিদার প্রেক্ষিতে সেখানে অনেক মেস গড়ে ওঠে। আরামবাগে কতগুলো মেস রয়েছে এর কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে এলাকার অর্ধেকের চেয়ে বেশি বাড়িতেই মেস ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এই কারণে এলাকাটি মেসপাড়া হিসেবেও প্রসিদ্ধ। [৪]
জনপ্রতিনিধি
[সম্পাদনা]আরামবাগ জাতীয় সংসদের ঢাকা-৮ আসনের (আসন নং ১৮১) অন্তর্ভুক্ত। বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদে এই আসনের সাংসদ হলেন সাবেক মন্ত্রী, বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বিগত নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
পূর্বে আরামবাগ অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত ছিল। বর্তমানে এই এলাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৯ নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। এই ওয়ার্ডের মধ্যে কেবল আরামবাগেই আবাসিক এলাকা রয়েছে, বাকিগুলো সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকা। তাই ৯ নং ওয়ার্ডের সিংহভাগ ভোটার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম আরামবাগে কেন্দ্রীভূত এবং কাউন্সিলরের কার্যালয়ও এখানে অবস্থিত। সর্বশেষ ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস[৫] এবং ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন মোজাম্মেল হক।[৬] দুজনই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য।
ক্রীড়া সংগঠন
[সম্পাদনা]আরামবাগ এলাকার নামে নামকরণ করা হয়েছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ক্রীড়া সংগঠনের- আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। মহল্লা ভিত্তিক প্রতিযোগীতার মাধ্যমে দেশে ফুটবল খেলার প্রসারে ১৯৫৮ সালে রাজধানীর আরামবাগের ১০ নম্বর ভবনে (বর্তমানে ১৭৬/১) যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে নিজস্ব ভবনে অবস্থিত আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের তত্ত্বাবধানে। জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপে ১ বার বিজয়ী হওয়া (২০১৮ স্বাধীনতা কাপ),[৭] ৪র্থ এবং ৫ম শীতল মহিলা হ্যান্ডবলে এ ক্লাব চ্যাম্পিয়ন, নেপালে আলফা কাপ চ্যাম্পিয়ন, সিকিমে অনুষ্ঠিত অষ্টম চিফ মিনিস্টার গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে রানার্সআপ হওয়াসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে ক্লাবটির অনেক অর্জন রয়েছে।[৮]
এছাড়া আরামবাগ ও এর আশেপাশে দেশের অধিকাংশ খ্যাতিমান ক্লাব রয়েছে। ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত ওয়ারী ও ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে সঙ্গে সদ্য প্রতিষ্ঠিত সোনালী অতীত ক্লাব ও মেরিনার্স ক্লাব এই এলাকায়।[৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ শামীম খান; দীপন নন্দী। "ঢাকা দক্ষিণে যারা কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেন"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ১৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০২০।
- ↑ ক খ বরুণ দাস (১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "বাগবাগিচার শহর"। সমকাল। ২০২০-০৬-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৭।
- ↑ http://www.boishakhionline.com/44279/[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ আপেল মাহমুদ (৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫)। "চাঁদাবাজি দখল জুয়া চলছে সমানতালে"। কালের কণ্ঠ।
- ↑ "দক্ষিণে তাপসের জয়"। ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "ঢাকা দক্ষিণে কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেন যারা"। দৈনিক ইনকিলাব। ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০। ১৯ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০২০।
- ↑ "চ্যাম্পিয়ন হবার পর অভিনন্দনে সিক্ত আরামবাগ ! | Independence Cup Football"। ইউটিউব। সময় টিভি। ২০১৮-০২-১১।
- ↑ "আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ"। thedemoz.com। ২০২০-০১-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-০১।
Text is available under the CC BY-SA 4.0 license; additional terms may apply.
Images, videos and audio are available under their respective licenses.