অতীন্দ্রমোহন রায়
অতীন্দ্রমোহন রায় | |
---|---|
জন্ম | ১৮৯৪ |
মৃত্যু | ৫ এপ্রিল ১৯৭৯ |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বিপ্লবী নায়ক |
রাজনৈতিক দল | স্বাধীনতার পুর্বে অনুশীলন সমিতি |
আন্দোলন | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন |
অনুশীলন সমিতি |
---|
প্রভাব |
অনুশীলন সমিতি |
উল্লেখযোগ্য ঘটনা |
সম্পর্কিত প্রসঙ্গ |
অতীন্দ্রমোহন রায় যিনি অতীন রায় নামে বেশি পরিচিত (১৮৯৪-১৯৭৯) ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।[১]
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]অতীন্দ্রমোহন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার ভোলাচঙ্গ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আনন্দমোহন রায়। কুমিল্লা ইউসুফ স্কুলের ছাত্র অবস্থায় অতীন রায় বিপ্লবী অনুশীলন সমিতির সদস্য হন।[২] এর দায়ে তার জেল হয়েছিল। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি সক্রিয় বিপ্লবী হয়ে ওঠেন এবং এরপর আজীবন বিপ্লবী ছিলেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম কুমিল্লায় আসলে অতীন্দ্র রায় তার অন্তরঙ্গ হয়ে ওঠেন এবং বিপ্লবীদের মুখপত্র ধূমকেতু প্রকাশের পর কবিকে অভিনন্দন জানান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন।
স্বাধীনতা আন্দোলন
[সম্পাদনা]অতীন্দ্রমোহন কিছুটা খর্বকায় হলেও সুঠামদেহী ছিলেন; তিনি নিয়মিত ব্যায়াম করতেন। অন্যান্য বিপ্লবীদের মত তিনিও গান্ধীর অহিংস আন্দোলনে বিশ্বাস করতেন না। ১৯১৩ সালে অনুশীলন সমিতির সাথে যুক্ত হয়ে যান। কুমিল্লা জেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক শরত বসু ছিলেন ইংরেজ পুলিশের চর। ১৯১৫ সালে বিপ্লবীরা তাকে হত্যা করে, এই হত্যাকান্ডে তার হাত ছিলো। ত্রিপুরার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এমারসন, পুলিশের ডি এস পি বসন্ত চ্যাটার্জীর হত্যার সাথেও জড়িত ছিলেন। ১৯১৬ তে গ্রেপ্তার হয়ে ১৯২১ অব্দি মেদিনীপুর জেলে থাকেন। এর পরেও দু বার কারারুদ্ধ হয়েছেন।[৩] তিনি ১৯৪০ সালে কুমিল্লায় বিপ্লবী সমাজতন্ত্রী দল নামে একটি গোপন বিপ্লবী দল গড়তে সাহায্য করেন।[২] এই বিপ্লবীরা আগরতলা মহারাজার কাছ থেকে গোপনে অর্থসাহায্য পেত। তারা ভারতব্যাপী একটি সশস্ত্র বিপ্লবের প্রস্তুতি নিয়েছিল। ব্রিটিশদের প্রতি অণুগত ধনাঢ্য ব্যক্তিদের বাড়িতে ডাকাতি করে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে নাবিকদের মাধ্যমে তারা বিদেশ থেকে যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহ করত। জার্মানি থেকে বিপ্লবীদের জন্য কয়েক জাহাজ উন্নত মানের যুদ্ধাস্ত্র প্রেরিত হয়েছিল। এ তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে বহু বিপ্লবী ধরা পড়ে এবং তাদের কঠোর শাস্তি হয়। অতীন্দ্র রায় এই বিপ্লবী দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৪ মাস পলাতক থাকার পর তিনি ধরা পড়েন। তাকে ২৪ বছর কারাভোগ করতে হয়।
শেষ জীবন
[সম্পাদনা]দেশ বিভাগের পর ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৪ পর্যন্ত তিনি কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন।[২] কুমিল্লা অভয় আশ্রম, বসন্ত স্মৃতি পাঠাগার, অমূল্য স্মৃতি পাঠাগার ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে তিনি অবদান রাখেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী, তার পুত্র কুমিল্লা কলেজের রসায়ন বিভাগের ডেমোনস্ট্রেটর অসীম রায়কে কুমিল্লা সেনানিবাসে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এরপর থেকে অতীন্দ্র রায় বই-পুস্তক পড়ে নিঃসঙ্গ জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি কুমিল্লার বাগিচা গাঁয়ে একটি টিনের ঘরে বাস করতেন এবং অত্যন্ত সাদাসিধা জীবন যাপন করতেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ মোল্লা, মহিউদ্দিন। "ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেট হত্যার নেত্রী শান্তি-সুনীতি"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২৯ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১৬।
- ↑ ক খ গ চৌধুরী, অজিত কুমার। "রায়, অতীন্দ্রমোহন"। বাংলাপিডিয়া। এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ। ২৯ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১৬।
- ↑ সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খন্ড। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। ২০০২। পৃষ্ঠা ৭–৮। আইএসবিএন 81-85626-65-0।
Text is available under the CC BY-SA 4.0 license; additional terms may apply.
Images, videos and audio are available under their respective licenses.